ঢাকা: প্রতি বছরই বাড়ছে আদিবাসী নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা। এর মধ্যে ধর্ষণ ও শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনা বেশি ঘটছে।
শনিবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আদিবাসী নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক চৈতালী ত্রিপুরা। তিনি জানান, ২০১২ সালে ৭৫ জন, ২০১৩ সালে ৬৭ জন এবং ২০১৪ সালে ১১৭ জন আদিবাসী নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা চালানো হয়। ২০১৪ সালে যৌন ও শারীরিক সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুর মধ্যে ৫৭ শতাংশই শিশু।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, মোট জনসংখ্যার মধ্য নারী ও শিশুদের ওপর ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও তুলনামূলক এই হারটা আদিবাসী ও নারী শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি। মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.২ শতাংশ হয়েও তাদের ওপর সহিংসতার হার ১২ শতাংশ। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আদিবাসী নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে জানানো হয়, বিচারহীনতা, সংস্কৃতির ভিন্নতা, পোশাকের ভিন্নতা, ভূমি পুনর্বাসন নিষ্পত্তি না হওয়া, যৌন হয়রানির শিকার নারীদের পরীক্ষায় চিকিৎসকদের নানা টালবাহানা, শাস্তি না হওয়া, সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত আইনি ও বস্তুগত সহায়তা ও পরিবারের নিরাপত্তার অভাবসহ বিভিন্ন কারণে এসব ঘটনা বারবার ঘটছে।
উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আদিবাসী নারী ও শিশুরা চরম নিরপত্তাহীনতায় রয়েছেন। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ তিনটি জেলায় এসব ঘটনা বেশি ঘটছে। সরকার ও সুশীল সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসার আহবানও জানান বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাখি দাস, কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা, সদস্য পার্বতী রায়, সুজয়া ঘাগ্রা, সিলভিয়া খিয়াং প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫