বরিশাল: কুয়াকাটায় বেড়াতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বরিশাল জেলা মৎস্য আড়ৎদার সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষে টুটুল গুলিবিদ্ধ হন বলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, বরিশালের বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কুয়াকাটা প্রমোদ ভ্রমণে যান যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্টজন হওয়ায় নিরব হোসেন টুটুলও তাদের সফর সঙ্গী হন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে তারা কুয়াকাটার সি ভিউ নামে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। ওই হোটেলের কক্ষেই শুক্রবার বিকেলে গুলিবিদ্ধ হন টুটুল। তবে কেন কিভাবে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা জানা যায়নি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) শোয়েব আহমেদ বলেন, টুটুলের পায়ে গুলি লেগেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার পরপরই তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গভীররাতে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
হোটেল সি-ভিউয়ের ব্যবস্থাপক সোলায়মান ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিক আমির হোসেনকে জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ৫০ জনকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে ওঠেন সাদিক আব্দুল্লাহ। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে হোটেলের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে হোটেল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে বরিশাল নিয়ে যাওয়া হয়।
কুয়াকাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় মণ্ডল জানান, শটগানের গুলিতে একজন আহত হয়েছেন শুনে তারা হোটেলে গিয়েছিলেন। তবে তারা পৌঁছানোর আগেই আহত ব্যক্তিকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার রাত সোয়া ৯টায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে টুটুলকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খাতায় তাকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দেখানো হয়েছে।
ভর্তির সময় ব্রাদার লিঙ্কন ও ওয়ালিদখান এবং দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমানের কেউই রোগীকে দেখেননি বলে জানিয়েছেন।
পরে জানা যায়, অজ্ঞাত কারণে সেখানে ভর্তি না করে গোপনে বরিশালের কালিবাড়ি রোডের বাসভবন সংলগ্ন ফেয়ার হেলথ ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়।
ফেয়ার হেলথ ক্লিনিকে সূত্রে জানা যায়, রাত ১০টার দিকে সেখানে নেওয়ার পর টুটুলকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এসময় ক্লিনিকে যুবলীগের কিছু নেতাকর্মীকে রক্ত ও ওষুধ নিয়ে অবস্থান করছিলেন।
ক্লিনিকের চিকিৎসক জহিরুল হক মানিক জানান, গুরুতর অবস্থায় টুটুলকে ক্লিনিকে আনা হয়। তবে তার পায়ে গুলি লাগার ব্যাপারে মন্তব্য না করে তিনি জানান, টুটুলের ডান পায়ে গুরুতর জখম রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার স্নায়ু কাজ করছে না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫