ঢাকা: রাজশাহী, যশোর ও কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জামায়াত-শিবিরের তিন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
এরা হলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং ক্রপ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ শাহাবুদ্দীন, যশোরের জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলাম (৩২) ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শিবিরের সভাপতি শাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী (৩০)।
এ বিষয়ে রাজশাহী থেকে স্টাফ ও রাবি করেসপন্ডেন্ট জানান, বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত একটার দিকে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’-এ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মাদ শাহাবুদ্দীন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় শিবিরের আরো দুই নেতা গুলিবিদ্ধ ও এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত একটার দিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের একটি টইল দল কাটাখালী শমসাদীপুর এলাকায় টইল দিচ্ছিল।
এ সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা শিবির ক্যাডাররা অতর্কিতে পুলিশের ওপর ককটেল হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও শিবিরের তিন নেতা গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক শিবির নেতা শাহাবুদ্দীনকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহত অপর দুই শিবির নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা শিবিরের সভাপতি হাবিবুর রহমান ও শের-ই-বাংলা হল শিবির নেতা মফিজুল ইসলাম রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওসি আরো জানান, সংঘর্ষে মাহবুবুর রহমান নামে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাকেও রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, যশোর থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানান, বুধবার রাতে যশোরের শার্শা থানা পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া জামায়াত কর্মী শহিদুল ইসলাম (৩২) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দুইটার দিকে যশোরের রামনগর পিকনিক কর্নার এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’-এর ঘটনা ঘটে।
নিহত শহিদুল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত নূর আলী সানার ছেলে ও জেলা জামায়াতের আমির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবদুল খালেকের ভাগিনা।
পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দুইটার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়কের সদর উপজেলার রামনগর পিকনিক কর্নার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’-এ শহিদুল নিহত হন।
এ সময় তিন পুলিশ কনস্টেবলও আহত হয়েছেন পুলিশ দাবি করেছে।
এ বিষয়ে যশোরের পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দুইটার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়কে রেজিস্ট্রেশনবিহীন একটি মাইক্রোবাস যেতে দেখে পুলিশ সেটিকে থামায়।
এই সময় মাইক্রোবাসে থাকা যুবকরা পুলিশের ওপর অতর্কিতে বোমা হামলা করে ও গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ২৫ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে ১২ থেকে ১৪ জন যুবক মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে গেলেও একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আক্তার, শহীদ ও মনির নামে তিন কনস্টেবল আহত হন।
এ ছাড়া কুমিল্লা থেকে ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার লালবাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’-এ উপজেলা শিবিরের সভাপতি শাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী (৩০) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’-এর ঘটনা ঘটে।
নিহত উপজেলা শিবিরের সভাপতি শাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী উপজেলার পৌর এলাকার চান্দিশকরা এলাকার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার বাংলানিউজকে জানান, ভোরে চৌদ্দগ্রামের লালবাগ এলাকায় শিবিরের নেতাকর্মীরা নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এতে শাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৫