ময়মনসিংহ: ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ-হরতালে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোল আদায়ে ধস নেমেছে। স্বাভাবিক সময়ে এখানে প্রতিদিন গড়ে পৌনে দুই লাখ টাকার টোল আদায় হতো।
কিন্তু চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় সেতুর উপর দিয়ে বাস-ট্রাক চলাচল কমে যাওয়ায় টোল আদায় এক লাখ টাকার নিচে নেমে এসেছে।
জানা গেছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, শেরপুর এবং ময়মনসিংহের ফুলপুর ও হালুয়ঘাটের যানবাহন চলাচলের একমাত্র পথ এ সেতু। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ স্থানীয় মেসার্স ফরহাদ এন্টারপ্রাইজকে এ সেতুর টোল আদায়ে ইজারার দায়িত্ব দেয়।
২০১৫ সালের মে মাসে এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু গত এক মাসের টানা হরতাল-অবরোধে লোকসানের মুখে পড়ে চরম বিপাকে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সংশ্লিষ্ট ইজারাদার সূত্র জানায়, আগে প্রতিদিন এ সেতুর উপর দিয়ে গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতো। এ হিসেবে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা টোল আদায় হতো। কিন্তু গত এক মাসে সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন মাত্র ৪শ’ থেকে ৫শ’ যানবাহন চলাচল করছে। ফলে ধস নেমেছে টোল আদায়ে।
ফরহাদ এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল জানান, হরতাল-অবরোধের আগের দিনগুলোতে প্রতিদিন গড়ে এক লাখ ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার টোল আদায় হতো। গত এক মাসে গড়ে প্রতিদিন মাত্র ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার টোল আদায় হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নাশকতার আশঙ্কায় দূরপাল্লার যান চলাচল একেবারেই কমে গেছে। আভ্যন্তরীণ সড়কে লোকাল বাস ও ট্রাক চলাচল কিছুটা রয়েছে। ছোট যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এর ফলে টোল আদায়ের পরিমাণও কমে গেছে।
টানা অবরোধ-হরতালের কারণে কমপক্ষে ২৫ লাখ টাকার টোল আদায় কম হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
সেতুর টোলবক্সের কর্মচারীরা জানান, অবরোধ থাকলে রাতে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। কিন্তু হরতাল হলে ট্রাক চলাচল কমে যায়। নাশকতার ভয়ে বাস-ট্রাক মালিকরা রাস্তায় গাড়ি নামান না। ফলে টোল আদায় যেমন কমছে, তেমনি আমাদের পেটেও লাথি পড়ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৫