ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

হরতাল-অবরোধে ফেনীতে বাড়ছে সবজির দাম

সোলায়মান হাজারী ডালিম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫
হরতাল-অবরোধে ফেনীতে বাড়ছে সবজির দাম ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফেনী: শীত মৌসুমে উৎপাদিত হয় নানা স্বাদের সবজি। সে সবজিগুলোর দামও থাকে ক্রেতা সাধারণের নাগালের মধ্যে।

টানা অবরোধের ফলে ফেনীর সবকটি বাজারে শীতের বিক্রি হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের চাইতে দ্বিগুণ দামে।

এ অবস্থার জন্য বিক্রেতারা অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়াকে দায়ী করেছেন। রোববার ফেনী বড় বাজারে বাংলানিউজকে এমনটাই জানালেন খুচরা সবজি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন।

শাহ আলম নামে এক ক্রেতা জানান, হরতাল অবরোধে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভরা মৌসুমেও সবজি স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

সোমবার শহরের বড় বাজার, মুক্ত বাজার, সুলতান মাহমুদ মার্কেট মহিপাল কাঁচা বাজার ও দাউদপুলের সবজির পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে কৃষিপণ্য সরবরাহ কম হচ্ছে। তাছাড়া ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক আসায় ভাড়াও বেড়েছে। এ কারণে খুচরায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

শীতে আলু উৎপাদনের ভরা মৌসুমে যেখানে কেজি প্রতি দাম হয় ৬/৭ টাকা সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়, ১০/১৫ টাকার সিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, ১০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়, ১৫ টাকার ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, ১০/১২ টাকার টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, ৪০ টাকার করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

একইভাবে ৫০ টাকার শালগম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, ১৫ টাকার পেঁপে ৩০ টাকা এবং ১৫ টাকার কাঁচকলা ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩০ টাকা, ধনিয়া ৬০ পাকা, সীমের বিচি ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।

ফেনী বড় বাজারের ইসমাইল হোসেন নামে এক তরকারি ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, অবরোধের কারণে ১০ হাজার টাকার ট্রাক ভাড়া এখন ২৫-৩০ হাজার টাকা গুণতে হয়। এছাড়া বিক্রি কম হওয়ায় সবজিও কম আনা হচ্ছে। পঁচে যাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কিছু সবজিতে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে।

পারভেজ নামে আরেক সবজি বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, অবরোধে বিভিন্নস্থানে গাড়ি পোড়ানোর পর ঝুঁকি নিয়ে পণ্য পরিবহনে নারাজ ট্রাক চালকরা। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ফেনীতে তরকারি সরবরাহের জন্য অর্ধশতাধিক ট্রাক আসতো, সেখানে হরতাল অবরোধে আসে হাতেগোনা কয়েকটি। এভাবে অবরোধ অব্যাহত থাকলে একদিকে ব্যবসায়ীদের যেমন ক্ষতি হবে, অন্যদিকে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষেরও ভোগান্তির অন্ত থাকবে না।

এ ছাড়াও বাজার ঘুরে দেখা যায়, অবরোধের ১ মাসে ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। মরিচের দাম ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত থাকলেও হলুদের দাম ১০৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকায়। সয়াবিন  তেল কেজি ৯০ টাকা, রসুন ৮৫ টাকা, চিনি ৪২ টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে।

ফেনীর তরকারি বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মনে করছে এভাবে চলতে থাকলে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে অনেকেই এখন দিশেহারা।

অপরদিকে সাধারণ ক্রেতা সাধারণ মনে করে দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সর্বোপরি সাধারণ মানুষের দিকে চেয়ে সরকার ও আন্দোলনকারীদের উচিৎ সংকট মোকাবেলা করতে আলোচনার টেবিলে বসা।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।