জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে এইচআইভি রোগির সংখ্যা ৩ হাজার ৬ শ’ ৭৪ জন বলে সংসদকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।
বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে সুকুমার রঞ্জন ঘোষের (মুন্সিগঞ্জ-১) প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে এইচআইভি পজেটিভ রোগির সংখ্যা ৩ হাজার ৬ শ’ ৭৪। তারমধ্যে এইডস আক্রান্ত রোগির সংখ্যা ১ হাজার ৪ শ’ ১৭ জন। এইচআইভি পজেটিভ এবং এইডস আক্রান্ত রোগির মধ্যে যাদের সিডি ৪ কাউন্ট পরীক্ষা করে ৫০০’র নীচে ভেল্যু পাওয়া যায়, সে সব রোগির সরকারি তত্ত্বাবধান ও অর্থায়নে আশার আলো, মুক্ত আকাশ বাংলাদেশ ও সিএএপি (CAAP) নামক তিনটি এনজিওর মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
তিনি বলেন, যেহেতু রোগটি নিরাময়যোগ্য নয়, সেহেতু জনসাধারণ যাতে এ রোগে আক্রান্ত না হয় সে বিষযে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে, আগামী ২০-২৩ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশে আয়োজিত সবচেয়ে বৃহৎ আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
শতকরা ৭৮ জন দম্পতি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন
নিজাম উদ্দিন হাজারীর (ফেনী-২) এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বর-২০১৪ পর্যন্ত শতকরা ৭৮ দশমিক ৪ জন দম্পতি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণকারীর মোট সংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার ১১৬ জন। ১৯৭৫ সালে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ছিল ৭ দশমিক ৭৫। বর্তমানে এ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ৬১ দশমিক ২ শতাংশ।
গত ৬ বছরে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় শতকরা ১২৩ দশমিক ৮৬ ভাগ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে গতকালের প্রশ্নত্তোর পর্বে মমতাজ বেগমের (মানিকগঞ্জ-২) প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য খাতে ২০০৭ সালে প্রকৃত ব্যয় ছিল ৪ হাজার ২ শ’ কোটি ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪ শত ৮ কোটি ৭৮ লাখ ২৩ হাজার টাকা। সে অনুযায়ী গত ৬ বছরে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বেড়েছে শতকরা ১২৩ দশমিক ৮৬ ভাগ।
মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সব সরকারি হাসপাতালগুলোতে সর্বমোট ৩ হাজার ৭৩২টি চিকিৎসকের পদ খালি আছে। এর মধ্যে রয়েছে- মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
মমতাজ বেগমের (মানিকগঞ্জ-২) প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের চাহিদার শতকরা ৯৭ ভাগেরও বেশি ওষুধ বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। ভ্যাকসিন, এন্টি-টকসিন, ইনস্যুলিন ও এন্টিক্যান্সার ওষুধের মতো খুবই উন্নত প্রযুক্তির কিছু ওষুধ ছাড়া প্রয়োজনীয় সব প্রকার ওষুধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। তিনি বলেন, ওষুধ শিল্পে অগ্রগতি ও উৎপাদিত ওষুধ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিধায় বর্তমানে দেশে উৎপাদিত ৬৩টি থেরাপিউটিক গ্রুপের বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ৯১টি দেশে রফতানি হয়ে আসছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আমিনা আহমেদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, প্রচলিত ওষুধ আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমানে সরকার কেবলমাত্র ১১৭টি জেনেরিক নামের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তালিকা বহির্ভুত বাকি ওষুধের নির্দেশক মূল্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পদ্ধতিতে নির্ধারণ করে। অত্যাবশ্যকীয় ১১৭টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি টেকনিক্যাল সাব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৫