ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

লাইসেন্স সারেন্ডারের হুমকি দিলো হাব

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫
লাইসেন্স সারেন্ডারের হুমকি দিলো হাব ছবি: জাহিদ সায়মন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় মুয়াল্লেম ফি’র সঙ্গে বিমানের টিকেট বাবদ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিতে রাজি নয় বেসরকারি হজ এজেন্সিদের সংগঠন- হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।

সরকার মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে টিকেটের টাকা জমা দিতে বাধ্য করলে এ বছর হজের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে হজ লাইসেন্স সারেন্ডার করারও হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।



বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন হাব সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি সরকার ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য হজকে পূর্ণাঙ্গরূপে ‘ই-হজ’ সিস্টেমে বাস্তবায়নের দৃঢ়তা পোষণ করায় জানুয়ারির শুরু থেকেই অনলাইনে এজেন্সির নিবন্ধনকরাসহ আনুষঙ্গিক চুক্তি সম্পন্নের বিধান করে।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় ন্যূনতম হজ প্যাকেজ মূল্য দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা নির্ধারণ করে হজ প্যাকেজ অনুমোদিত হয়।

হজ প্যাকেজে হজযাত্রীদের মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়া বাবদ এক লাখ ২০ হাজার টাকাও একসঙ্গে সরকারি কোষাগারে জমাদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মুয়াল্লেম ফি’র সঙ্গে বিমান ভাড়ার টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম বাতিলের দাবি জানিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর হাবের পক্ষ থেকেও হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

ওই দিন হাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়া সরকারি কোষাগারে জমাদানের এ নিয়মে পুরো হজ ব্যবস্থাপনাতেই বিরূপ প্রভাব পড়বে। হজে যেতে ইচ্ছুকদের অধিকাংশের ক্ষেত্রেই এক সঙ্গে এত টাকা জমা দেওয়া সম্ভব হবে নয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করে হাব।

হাব সভাপতি বলেন, গত ১৯ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদে আমাদের দাবিটি উত্থাপিত হয় এবং নিবন্ধনের সময় মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়ার এক লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিমান ভাড়ার ২০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমাদানের অনুমোদন দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, কিন্তু এতেও হজ কার্যক্রমে জটিলতা দেখা দেয়।

তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন, টিকেটের টাকা ধর্ম মন্ত্রণালয় গ্রহণ করলে তা কীভাবে এজেন্টকে ফেরত দেওয়া হবে। যে হজযাত্রী এয়ারলাইন্সের ফ্রি টিকেটে যাবেন বা অপ্রাপ্ত বয়স্কদের টিকেট কী নিয়মে কাটতে হবে, তার কোনো স্পষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই।

তিনি আরো বলেন, হাজিদের পছন্দ মতো শর্ট প্যাকেজ ও দীর্ঘ প্যাকেজ করা হয় এবং টিকেটে নির্ধারিত যাওয়া আসার তারিখ অনুযায়ী প্যাকেজের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়। সরকারের হাতে টিকেটের অর্থ থাকলে এ ব্যবস্থাপনা চরমভাবে ব্যর্থ হবে।

হাব সভাপতি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার হজযাত্রীর ডাটা এন্ট্রি হয়েছে। তবে পেমেন্ট না দেওয়ায় নিবন্ধিত হয়নি।

নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সময় ২১ দিন বাড়ানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইব্রাহিম বাহার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি হাবের বিশেষ সাধারণ মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়ার আংশিক অর্থগ্রহণ যুক্তিযুক্ত নয়। টিকেটের টাকা জমাকরণের উদ্ভূত জটিলতার প্রেক্ষাপটে আগের মতো শুধু মুয়াল্লেম ফি জমা নিয়ে নিবন্ধন করার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

হাব সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার বলেন, সরকার যদি মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে টিকেটের টাকা জমা দিতে বাধ্য করে, তাহলে গত ৩ ফেব্রুয়ারির হাবের জরুরি সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এ বছর হজের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে হজ লাইসেন্স সারেন্ডার করবো।

এ সময় তিনি সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
 
সংবাদ সম্মেলনে হাবের মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কবির খান জামান, সহসভাপতি আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার, অর্থ সচিব মোজাম্মেল হোসেন কামাল, জনসংযোগ সচিব সায়েম মোহাম্মদ হাসান এবং সাংস্কৃতিক সচিব পীরজাদা মাওলানা মু’তাসিম বিল্লাহসহ হাবের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।