ঢাকা: হরতাল-অবরোধে এক সপ্তাহ আগেও পেট্রল বোমা আর ককটেলের আতঙ্কে ছিল রাজধানীবাসী। সে আতঙ্কে রাতের রাজধানীও ছিল জন-মানবশূন্য।
সেই ভূতুড়ে রাতের রাজধানী এখন ফিরতে শুরু করেছে চিরচেনা রূপে। ব্যস্ত হয়ে উঠছে চারপাশ।
রাতের রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে দেখা গেছে মানুষের জটলা। অবরোধের মধ্যেও সড়কে দাপিয়ে চলছে যানবাহন। মধ্যরাতে প্রাইভেটকারে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়ানোটাও ছিল চোখে পড়ার মত।
এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিএনপি জোটের অবরোধ এবং তার সঙ্গে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা হরতালে নাশকতায় পুড়েছে মানুষ। রাজধানীতে সন্ধ্যা হলেই আতঙ্কে বের হতো না কেউ। চলতো বাসে পেট্রল বোমা, ককটেল হামলা এবং আগুন দেওয়ার ঘটনা। চারপাশে ছিল ভূতুড়ে পরিবেশ।
বিপরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং শক্ত অবস্থানের কারণে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মনে।
শুক্রবার সকালে শেষ হয় টানা হরতাল। কিন্তু ছিল অবরোধ। এর মধ্যেই দিনভর বসন্ত বরণে মেতেছিল রাজধানীবাসী। বাংলা একাডেমীতে বই মেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসন্ত উৎসবসহ কয়েকটি স্থানে সাংষ্কৃতি অনুষ্ঠানে ছিল বসন্তসাজে মানুষের ভীড়।
সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাতে রাজধানীর গুলশান, বাড্ডা, মিরপুর, বিশ্বরোড, নতুন বাজার এলাকায় রাজধানীর স্বাভাবিক চিত্র চোখে পড়ে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকলেও সামনের সড়ক দিয়ে ব্যক্তিগত অনেক গাড়ি চলাচল করতে দেখা যায় রাত একটার দিকে। ৩ জানুয়ারি থেকে অবস্থান করা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থানের কারণে কার্যালয়ের সামনে উপস্থিতি ছিল সংবাদকর্মীদেরও।
সেখানে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ এই এলাকায় রাতে বের হওয়ার সংখ্যা বেশি।
শুক্রবার বসন্ত বরণ উৎসব এবং পর দিন শনিবার বিশ্ব ভালবাসা দিবসের রেশ রাজধানীকে করেছে আরও ব্যস্ত। গুলশান এলাকায় প্রাইভটেকার নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে অনেককে।
রাত দুইটার দিকে বিশ্বরোড হয়ে প্রগতি স্মরণির সড়ক দিয়ে চলছে প্রাইভেটকারসহ বাস-ট্রাক, কার্গো এবং অন্যান্য যানবাহন। বিশ্বরোড চৌরাস্তা এলাকার একটি চায়ের দোকানের সামনে রাত আড়াইটার দিকে দেখা গেছে মানুষের জটলা।
এই এলাকায় গুলশান থানার টহল পুলিশের এক সদস্য বলেন, অন্যান্য রাতের তুলনায় আজ সড়কে যানবাহন চলাচল করছে বেশি।
এদিকে, সন্ধ্যার পর কারওয়ান বাজারে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ এবং শান্তিনগর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটোরিকশায় আগুন দিলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সরকারের মন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, সার্বিক পরিস্থিতি দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫