ঢাকা: ‘১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা নিজের জীবন উৎসর্গ করে শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামকেই বেগবান করেননি, অসংখ্য ছাত্রের জীবনও রক্ষা করেছেন। ’
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় ড. শামসুজ্জোহা স্মরণে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্মৃতিচারণকালে একথা বলেন বক্তারা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতি আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু।
এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান (অব.) ড. আবদুল করিম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের।
আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় সংসদের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার, সমিতির সহ-সভাপতি সৈয়দ তোসারফ হোসেন, সমিতির যুগ্ম মহাসচিব আমিরুল ইসলাম, মোহিনীমোহন চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ড. জোহা ছিলেন আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। তার আত্মত্যাগের পথ ধরেই এগিয়ে গিয়েছিল বাঙালি জাতির কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পরিস্থিতি এতই উত্তপ্ত ছিল যে, সেদিন ড. জোহা জীবন উৎসর্গ না করলে অসংখ্য ছাত্রকে প্রাণ দিতে হতো।
কেননা সেদিন ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে শহর অভিমুখে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেন। ছাত্রদের প্রতি ভালোবাসা ও উৎকণ্ঠায় উদ্বেলিত জোহা নিজের জীবনের নিরাপত্তা উপেক্ষা করে ছোটাছুটি করেছেন ছাত্রদের মিছিল ঠেকাতে। ড. জোহা ছাত্রদের নানাভাবে বুঝিয়ে ফটকের ভেতরে পাঠাতে সক্ষম হন।
পরে ড. জোহা যখন কর্তব্যরত সেনা কর্মকর্তাকে নাটোর রোডের পাশে রাখা তাঁর গাড়িতে তুলে দিতে যান সেই মুহূর্তে অকস্মাৎ তাঁকে প্রথমে গুলি ও পরে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করা হয়।
ড. জোহার আত্মদানের আগুন সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের ভিত কেঁপে ওঠে। আন্দোলনের তীব্রতা এতই বৃদ্ধি পায় যে তা গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। আইয়ুব সরকার বাধ্য হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫