ঢাকা: সরকারি দপ্তরসমূহের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা বাড়ানোর জন্য সরকারি কর্ম সম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
এজন্য প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ‘অ্যানুয়েল পারফরমেন্স এগ্রিমেন্ট-এপিএ’ সই করা হচ্ছে।
সোমবার(২৩ ফেব্রুয়ারি’২০১৫) মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার সাথে ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রধানদের চুক্তি সই হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে ‘সরকারি কর্ম সম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি(গভর্মেন্ট পারফরমেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) চালু করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এর মাধ্যমে সরকারের নীতি ও কর্মসূচির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হওয়ার পাশাপাশি পরোক্ষভাবে দুর্নীতি দমনে সহায়ক হবে বলেও জানান মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যারা দেশ পরিচালনা করেন তাদের ভিশন ও কর্মসূচিগুলো মনিটরিং ও মূল্যায়ন দরকার। আমাদেরও মনিটরিং ও মূল্যায়ন আছে। এ পদ্ধতিতে বর্তমানে প্রকল্পগুলো দেখাশুনা করা হয়। এসবের সমন্বিত রূপ দেওয়া প্রয়োজন।
বিভিন্ন দেশে সরকারের কাজের মনিটরিং ও মূল্যায়ন আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনপ্রশাসন সংষ্কার কমিশন প্রতিবেদন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল-২০১২-তে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে।
এছাড়া ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং গত বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত সার্কভূক্ত দেশসমূহের মন্ত্রিপরিষদ সচিবদের সম্মেলনেও কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রবর্তনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মশালাতেও এ সংক্রান্ত সুপারিশ আসে।
এসব সুপারিশের আলোকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের(সমন্বয় ও সংষ্কার) নেতৃত্বে একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি বিভিন্ন দেশের পদ্ধতি পর্যালোচনা করে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রস্তুত করে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় স্ব স্ব কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়-বিভাগেরে প্রধানদের সাথে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যবস্থা রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়,শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ চলতি বছরের বার্ষিক কর্ম সম্পাদন বিষয়ক চুক্তি সই করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্ট সচিবদের মধ্যে এ চুক্তি সই হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরও ৩৮টি মন্ত্রণালয়-বিভাগের সাথে চুক্তির বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
৬ মাস পর পর কাজের মনিটরিং ও বছর শেষে মনিটরিং ও মূল্যায়ন করে মার্কিং করা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা প্রশাসনিক ব্যবস্থায় টার্নিং পয়েন্ট ও নবযুগের সূচনা। স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি মন্ত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টুল।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেকে যাতে নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করে এবং প্রত্যেক মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেতন হতে হবে।
সরকারের রূপকল্প, নীতি বাস্তবায়নে এপিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫/আপডেটেড-১৭০৫ ঘণ্টা