ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কেবল প্রভাত ফেরির অপেক্ষা

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫
কেবল প্রভাত ফেরির অপেক্ষা

রাজশাহী: রাজশাহীতে এবার ভিন্ন আবহে পালন হতে যাচ্ছে মহান একুশে।

শনিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

সড়কের বুকে বাসন্তী রঙ আর বর্ণিল আল্পনা ইঙ্গিত দিচ্ছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের।

রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যলয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের মিলিত প্রয়াসে শুক্রবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনভর বিভিন্ন সড়কজুড়ে আঁকা হয়েছে আল্পনা। ফুলের দোকানে তৈরি হয়েছে ডালা। সব আয়োজন ও প্রস্তুতিই যেনো শেষ হয়ে এসেছে। এখন কেবল প্রভাত ফেরির অপেক্ষা।

শনিবারের সূর্য উঁকি দিতেই শহরজুড়ে লাখো কণ্ঠে প্রতিধ্বণিত হবে অমর একুশের প্রভাত ফেরির চিরম্লান গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...। ’

শিল্পী হাসান ইমাম রুসেল জানান, রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যলয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের মিলিত প্রয়াসে  শুক্রবার রাজশাহী শহরের গৌরহাঙ্গায় শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন, সিএনবির মোড়সহ নগরের প্রাণকেন্দ্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্র্ণ সড়কের মোড়ে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আল্পনা অঙ্কন করা হয়েছে। সেচ্ছ্বায় শ্রম দিয়ে দিনভর কাজ করেছেন সবাই।

মহানগরের নিউমার্কেট এলাকার ফুল ব্যবসায়ী নূর জানান, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ডালা তৈরির কাজ সামলাতে বর্তমানে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। শহীদ মিনারে আজ একুশের প্রথম প্রহরে যারা শ্রদ্ধা জানাবেন তাদের সন্ধ্যার মধ্যেই ডেলিভারী দেওয়া হয়। আর যারা প্রভাত ফেরিতে যাবেন তাদের ডেলিভারী দেওয়া হবে রাত ১০টার মধ্যে। এজন্য সন্ধ্যার মধ্যেই ডালা তৈরির সব কাজ গুছিয়ে আনতে হয়েছে।

তবে চাপ ও চাহিদা বাড়লে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ চলতে পারে বলে জানান তিনি।    

এদিকে রাজশাহীতে  যথাযোগ্য  মর্যাদা  ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা  দিবস পালনের লক্ষ্যে  জেলা  প্রশাসন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।

এ জন্য শহীদ মিনার ও আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কর্মসূচি অনুযায়ী রাজশাহী শহীদ মিনারে শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা ০১ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা  হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি-আধাসরকারি ও বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সঠিক নিয়মে, সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হবে। রাজশাহী মহানগরীর সড়ক দ্বীপসমূহে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে বাংলা বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, সংস্থা ও সর্বস্তরের জনসাধারণ সকালে প্রভাত ফেরিতে অংশগ্রহণ করবে।

রাজশাহী শিশু একাডেমিতে সকালে চিত্রাঙ্কন ও বাংলায় সুন্দর হাতের লেখা; দুপুরে ভাষার গান/ দেশাত্মবোধক গান এবং রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার বাদ জোহর মহানগরের হেতেমখাঁ মসজিদ কমপ্লেক্সসহ সব মসজিদে ও সুবিধামত সময়ে অন্যান্য উপাসনালয়ে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমিতে ভাষা সৈনিকদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর মোড় ও সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।