ঢাকা: একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাত ১২টা ১ মিনিটের পর প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা।
এ সময় তারা শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী শহীদদের স্মরণে শহীদ বেদিতে ফুল দেন। এরপর সফররত যুক্তরাজ্যের হাউজ অব লর্ডসের স্পিকার ব্যারোনেস ডি সুজা।
পরে সফররত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
এসময় তার সফরসঙ্গী রাজনীতিক, শিল্পী ছাড়াও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে বায়ান্নর ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির নেতারা।
এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও ছিলেন।
এরপর পর্যায়ক্রমে তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) চেয়ারপারসন সাবের হোসেন চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ভাষা সৈনিক এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও বিদেশি সংস্থার প্রধানরা শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর পর সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় শহীদ মিনার এলাকা। এরপর থেকে বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
একে একে সরকারি দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, বাংলা একাডেমি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান,যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ মিনারের বেদিতে শ্রদ্ধা জানায়।
তবে অন্যান্য বার ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে গেলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবার যাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। দেখা যায়নি ২০ দলের কোনো শরিক কিংবা বিএনপির কোনো অঙ্গ সংগঠনকেও।
এদিকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার দিনগত রাত ১০টার পর থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ সময় শাহবাগ, আজিমপুর, নীলক্ষেতসহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারমুখী প্রতিটি প্রবেশপথেই ছিল মানুষের মিছিলের সারি। সারা রাত থাকবে এই মানব ঢল।
অন্যদিকে ভোরে প্রভাত ফেরির আয়োজনও চলছে জোরেসোড়ে।
শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকায় মাইকে বাজানো হচ্ছে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’সহ কালজয়ী একুশের গান।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির এই দিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকসহ নাম না জানা শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা।
পরে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে ইউনেস্কো।
এরপর ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে দিনটি।
দিবসটি উদযাপনে শনিবার জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে, উত্তোলন করা হবে শোকের কালো পতাকা।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫
** জাবিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
** ভাষা শহীদদের কবরে বিএনপির শ্রদ্ধা
** ভোলায় শহীদ দিবস-আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধা
** ভাষা শহীদদের প্রতি বসুন্ধরা গ্রুপের বিনম্র শ্রদ্ধা
** লাখো মানুষের ঢল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে
** একুশের প্রথম প্রহরে মুন্সীগঞ্জে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা
** ময়মনসিংহে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনতার ঢল
** খাগড়াছড়িতে শহীদ মিনারে সর্বস্তরের বিনম্র শ্রদ্ধা
** প্রথম শহীদ মিনারের রূপকার ভাষা সৈনিক ডা. গোলাম মাওলা
** ফুলের চাদরে ঢাকা মেহেরপুরের শহীদ বেদি
** যশোরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন
** মাগুরায় একুশের প্রথম প্রহরে হাজার মানুষের ঢল
** বাগেরহাট শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল
** রাজশাহীতে একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে মানুষের ঢল
** সাতক্ষীরায় ফুলে ফুলে ভরে গেছে শহীদ বেদি
** খুলনায় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল
** চান্দিনায় ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ অর্পণ
** ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে গর্বিত মমতা