কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেদীর বাম ও ডানপাশে দুখিনী বর্ণমালায় আঁকা হয়েছে ‘২১ আমার চেতনা’। ভাষাই যে প্রত্যেক জাতির প্রকৃত সম্পদ, সেটাই যেন ফুটে উঠেছে প্রতিটি আল্পনায়।
স্বাধীন সর্বভৌম মানচিত্রের মাঝখানে পত পত করে উড়ছে লাল সবুজের পতাকা। গোলাপ ও নানা ধরনের ফুল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে লাল সবুজের পতাকা। বেদীতে উঠতে বাম কোণায় ভাসছে জাতীয় ফুল শাপলা, এটিও বানানো হয়েছে ফুল দিয়ে।
সমস্ত আল্পনাই আঁকা হয়েছে ফুল দিয়ে। প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক অপেক্ষার পর শহীদ বেদীতে ফুল দিয়েছেন আঁখি। আসলে তার মতো অনেকের ফুলই আল্পনার মূল উপকরণ। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই লাখো মানুষের ফুল দিয়ে তৈরি হয়েছে এসব আল্পনা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মাঝখানে তৈরি হয়েছে ছোট দু’টি শহীদ মিনার। এটি তৈরির প্রধান উপকরণও ফুল।
ভাষার স্বাধিকার আদায়ে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের প্রতি ভালোবাসার আত্মপ্রকাশই যেন এক একটি ফুল।
সারিবদ্ধভাবে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন দেশের সর্বস্তরের মানুষ। এর আগে, একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শহীদ বেদীতে সর্বস্তরের মানুষের ফুল দিয়ে আঁকা হয়েছে নানা রঙের আল্পনা। আর এ কাজগুলো পরম মমতা দিয়ে সম্পূর্ণ করছেন কিছু মানুষ।
এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। মিনারমুখী সব রাস্তায় ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের সতর্ক পাহারা। তাদের সঙ্গে পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটের কয়েক হাজার সদস্য। আরও রয়েছে বিএনসিসির সেনা, বিমান ও নৌ শাখার সদস্যরা।
অন্যদিকে, শহীদ বেদীতে আল্পনা আঁকার কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের মেয়েরা। ভক্তরা যেসব ফুল ও ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সেগুলো সংগ্রহ করে তারা আঁকছেন নানা আল্পনা।
শহীদ বেদীতে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সুমনা আক্তারের সঙ্গে।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অমর একুশ উপলক্ষে সবাই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে ভাষা শহীদদের। সেই ফুলগুলো দিয়ে আমরা শোভিত করছি প্রাণের মিনার। দেশের মানচিত্র, শাপলাসহ ছোট ছোট শহীদ মিনারও আঁকা হচ্ছে এই ফুল দিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫