ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এখনো ৬ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দখলে এমপি ফ্ল্যাট

শাহজাহান মোল্লা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫
এখনো ৬ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দখলে এমপি ফ্ল্যাট

ঢাকা: দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের সংসদ সদস্য হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া ফ্ল্যাট ছেড়ে মন্ত্রী পাড়ায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর থেকে একাধিকবার ৭ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে তাগাদা দেওয়া হলে এদের একজন নির্দেশনা মানলেও বাকীরা এখনো তাদের দখলে রেখেছেন এমপি হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া ফ্ল্যাট।



ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের মৌখিকভাবে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি দুইবার সংসদ সচিবালয় থেকে ওইসব মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দেওয়া হয়। কিন্তু একজন ছাড়া বাকীরা চিঠির তোয়াক্কা করছেন না। এনিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে ‘সংসদ’ কমিটি।

সংসদ সদস্যরা সাধারণত রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ এবং নাখালপাড়া এলাকায় থাকেন। আর যারা মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান তাদের ঠিকানা হয় মন্ত্রিপাড়ায়।

কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া বাড়িটি না ছেড়েই অনেকে মন্ত্রিপাড়ায় থাকেন। সংসদ সদস্য হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া বাড়ি দখলে রাখার ফলে অন্য এমপিরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যারা নাখালপাড়া ও মানিকমিয়া এভিনিউ-এর ফ্ল্যাট দখল করে আছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান। যার ভবন নম্বর ৭ এবং ফ্ল্যাট নম্বর ৮। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এক নম্বর ভবনের ১০৪ নম্বর ফ্ল্যাটটি দখলে রেখেছেন। এছাড়া মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক ৭ নম্বর ভবনের ১০২ নম্বর ফ্ল্যাট নিজের দখলে রেখেছেন। ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের দখলে আছে ৪ নম্বর ভবনের ৪০৩ নম্বর ফ্ল্যাট।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের দখলে আছে ৪ নম্বর ভবনের ৭০৪ নম্বর ফ্ল্যাট। এছাড়া বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম ৪ নম্বর ভবনের ৯০২ নম্বর ফ্ল্যাটটি এখনো দখলে রেখেছেন।

আর চিঠি পাওয়ার পর এমপি হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া ফ্ল্যাট ছেড়েছেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ‘সংসদ’ কমিটির ৫ম বৈঠকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের ফ্ল্যাট না ছাড়ার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। পুনরায় ওইসব মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলা হয় কমিটিতে।

এ নিয়ে কথা হয় সংসদ কমিটির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি জানিয়েছেন, যেসব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা এখনো এমপি হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া ফ্ল্যাট দখলে রেখেছেন তাদের একাধিকবার মৌখিক এবং চিঠি পাঠিয়ে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেকে বলেছেন, শিগরিই ফ্ল্যাট ছেড়ে দেবেন। আমি আবারো তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যেন দ্রুত এসব ফ্ল্যাট ছেড়ে দেন। তারা ফ্ল্যাটগুলো ছেড়ে দিলে কিছু এমপি আছেন যাদের এখনো কোনো ফ্ল্যাট দেওয়া হয়নি, তাদের দিতে পারবো। মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে যেহেতু তাদের মন্ত্রিপাড়ায় ফ্ল্যাট রয়েছে। তাই তারা সেখানেই চলে যেতে পারেন। অযথা আরেকটি ফ্ল্যাট দখল করার দরকার কি, প্রশ্ন রাখেন ফিরোজ।

উল্লেখ্য, সংসদ সচিবালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর ‘সংসদ’ কমিটির চতুর্থ বৈঠকে যারা এমপি ফ্ল্যাট দখল করে রেখেছেন, তাদের ছেড়ে দেওয়া জন্য অনুরোধপত্র পাঠানো হবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি একটি চিঠিও দেওয়া হয়।

এরপর পুনরায় স্মরণ করিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি আরো একটি চিঠি দেওয়া হয়। তারপরেও ফ্ল্যাট ছাড়েনি মন্ত্রী- প্র্রতিমন্ত্রীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।