ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অভিজিৎ হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি এলাকা

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫
অভিজিৎ হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি এলাকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকা। সকাল থেকেই চলছে প্রতিবাদ মিছিল, সমাবেশ।

রাজু ভাস্কর্যের প্রতিটি প্রতিকৃতির চোখে বাঁধা হয় প্রতিবাদী কালো কাপড়। গণজাগরণ মঞ্চও অবস্থান নিয়েছে শাহবাগে।

এসব মিছিল-সমাবেশ থেকে এ হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিদের দায়ী করে তাদের রুখে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত ছাত্র-শিক্ষক-নাগরিকরা।

শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘আক্রান্ত মুক্তচিন্তা’ ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন কয়েকশ’ ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এম এম আকাশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক এজেএম শফিউল আলম ভূইয়া, সাংবাদিক কামাল লোহানী, লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রাণা দাশ গুপ্ত, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, হামিদা হোসেনসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতারা।

জঙ্গিরাই এসব হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে অভিযোগ করে কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম  বলেন, তাদের হত্যাকাণ্ডের ধরন দেখে সাধারণ মানুষও বলতে পারবে একই জঙ্গিগোষ্ঠী এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।

সেলিম বলেন, অভিজিৎকে যখন হত্যা করা হয়েছে তখন রাত গভীর হয়নি। টিএসসির সামান্য দূরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হুমায়ুন আজাদকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল সেভাবে রাজীব হায়দারকেও হত্যা করা হয়। একইভাবে গতকাল অভিজিৎকে হত্যা করা হলো।

এই হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে শুধু স্লোগান দিলে হবে না অভিজিতের ওপর আঘাতের প্রতিঘাত আমাদের দিতে হবে।

অভিজিৎকে হত্যার জন্য সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে দায়ী করে প্রবীণ রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা শুধু যুদ্ধ ঘোষণাই নয়, বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী দেশ করতে চায়, ‘বাংলাস্তান’ করতে তারা যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

তিনি আরও বলেন, এটা চলতে পারে না। আমরা এটা চলতে দিতে পারি না। এদের প্রতিহত করতে আমাদের একই কাঁতারে দাঁড়াতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, কয়েক বছর আগে আজকের এই দিনে যখন হুমায়ুন আজাদকে হত্যা করা হয়। তখনও ওই এলাকায় পুলিশ উপস্থিত ছিল। তাদের উপস্থিতিতে কীভাবে একজনকে হত্যা করা হয়েছিল তা আমার প্রশ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এদিকে সকাল থেকেই অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন।

‘আমার ভাই নিহত কেন, পুলিশ-র‌্যাব জবাব দে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব দে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা তাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।

অভিজিৎ হত্যাকারীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত অবস্থান চলবে বলে ঘোষণা দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫

** অভিজিৎ হত্যার প্রতিবাদ ঢাবি শিক্ষক সমিতির
** হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান
** অভিজিৎ হত্যার নিন্দা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির
** জঙ্গিদের দায়ী করে অভিজিতের বাবার মামলা
** অভিজি‍ৎ হত্যার নিন্দা অনুসন্ধিৎসু চক্রের
** ‘অভিজিৎ টার্গেট ওরিয়েন্টেড কিলিং’
** বিচারহীনতার কারণেই একের পর এক হত্যাকাণ্ড
** সন্ত্রাসী হামলায় লেখক অভিজিৎ নিহত, আহত স্ত্রী
** অভিজিৎ হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চলছে
** সন্ত্রাসী হামলায় লেখক অভিজি‍ৎ রায় নিহত, আহত স্ত্রী
** সন্ত্রাসী হামলায় আহত লেখক অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু
** টিএসসিতে সন্ত্রাসী হামলায় দম্পতি জখম
** অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার চায় ওয়ার্কার্স পার্টি
** ‘অভিজি‍ৎ খুনের বিরুদ্ধে আমরাই রুখে দাঁড়াবো’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।