ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

স্বর্ণ চোরাচালান

৩০ সিন্ডিকেটের ৭টি বিদেশি, শাহজালালকে ঘিরে ১১

ইমরান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৫
৩০ সিন্ডিকেটের ৭টি বিদেশি, শাহজালালকে ঘিরে ১১ ফাইল ফটো

ঢাকা: দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে ৩০টি সিন্ডিকেট স্বর্ণ পাচার করে থাকে। এর মধ্যে ৭টি বিদেশি সিন্ডিকেট রয়েছে।

দেশের ২৩টি সিন্ডিকেটের মধ্যে ১১টি সরাসরি আর ১২টি মানি এক্সচেঞ্জের আড়ালে কাজ করে।

১১টি দেশি সিন্ডিকেটের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘিরেই রয়েছে ৭টি। বাকি ৪টির মধ্যে ৩টি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর ও ১টি রয়েছে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরকে ঘিরে।

স্বর্ণ পাচার নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থারি এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি তৈরি করা এই প্রতিবেদনটিতে স্বর্ণ পাচারকারি সিন্ডিকেটে কারা জড়িত তার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রাণালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সকল সিন্ডিকেটের মূল হোতারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। কিছু দেশীয় সিন্ডিকেট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর সহায়তায় স্বর্ণের চালান বিমানবন্দর থেকে পার করে দেন। আর এর বিনিময়ে মাসিক অথবা প্রতি বারের ভিত্তিতে উৎকোচ গ্রহণ করেন।

প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, দেশে মানি এক্সচেঞ্জের আড়ালে স্বর্ণ পাচার করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- আলামিন মানি এক্সচেঞ্জ, ফারহান মানি এক্সচেঞ্জ, অনিক মানিএক্সচেঞ্জ, ঢাকা মানি এক্সচেঞ্জ, প্যরামাউন্ট মানি এক্সচেঞ্জ ও জাকির মানি এক্সচেঞ্জ। এর মধ্যে ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক হারুনুর রশিদ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে একবার আটকও হয়েছিলেন।

আলামিন মানি এক্সচেঞ্জের মালিক মামুন আল আজাদ ওরফে সুমন  বছর দুই  আগে বিদেশি অর্থসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। পরবর্তীতে জামিন নিয়ে তিনি এখন দুবাই অবস্থান করছেন।

দুবাইয়ে শফিউল আজম পিন্টু নামের আরেক ব্যক্তি বিভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠান দিয়ে এই স্বর্ণ পাচার করে থাকেন। দুবাই এ রয়েছে এমরান মানি এক্সচেঞ্জ। মালিক এমরান হোসেন স্বর্ণ চোরাচালানের একজন গড ফাদার হিসেবে পরিচিত। দুবাই থেকে যে সকল স্বর্ণ দেশে আসে তার অধিকাংশই তিনি পাচার করে থাকেন। আর সকল লেনদেনের হিসাব নিকাশও হয় তার প্রতিষ্ঠান থেকে।

বিমানের অনেক সদস্য দুবাই গিয়ে তার আতিথেয়তা নেন। শাহীন নামে আরেক ব্যক্তি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করে স্বর্ণ পাচার করে থাকেন। হাসান ও আব্বাস চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর ব্যবহার করে স্বর্ণ পাচার করে থাকেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে যে ১১টি স্বর্ণের সরাসরি সিন্ডিকেট রয়েছে সেগুলোর অধিকাংশরই মালিক চট্টগ্রামে থাকেন। চট্টগ্রাম জুয়েলারি সমিতির সভাপতির পুত্র জসিম এই সিন্ডিকেটের অন্যতম গডফাদার।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ বাংলানিউজকে বলেন, স্বর্ণ পাচার সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তিতে যাদের নাম পাওয়া যাবে আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

তিনি বলেন, অনেক গড ফাদার আত্মগোপনে রয়েছেন। আমরা তাদের পেলে অবশ্যই গ্রেফতার করব।

বাংলাদেশ সময় : ০৯১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।