ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মানুষ পুড়িয়ে মেরে হরতাল সফল হয় না

শফিক শামীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৫
মানুষ পুড়িয়ে মেরে হরতাল সফল হয় না ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: হরতাল ডেকে ঘরে বসে থাকলে কী আর হরতাল পালন হয়! টাকার বিনিময়ে টোকাই ভাড়া করে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মেরে হরতাল সফল করা যায় না।
 
সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীতে যানজটে পড়ে এক যাত্রী বিরক্তি নিয়ে ও ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এ মন্তব্য করেন।



তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধের মধ্যে আবার ৭২ ঘণ্টার হরতাল। তারপরেও রাজধানীতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার সকালে রাজধানীর নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, আগারগাঁও, মিরপুর, শ্যামলী, ফার্মগেট, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, পল্টন ও  প্রেসক্লাব এলাকা ঘুরে একইরকম চিত্র দেখা গেছে।

বেলা যত বেড়েছে, ততই যানবাহনের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে।

বেসরকারি চাকরিজীবী শেখর আহমেদ। রামপুরা থেকে গুলিস্তান যেতে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দেড়ঘণ্টা সময় বেশি  লেগেছে তার।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অবরোধ-হরতালের মধ্যেও রামপুরা থেকে গুলিস্তান যেতে দেড়ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। এই যদি হয় হরতালের চিত্র, তাহলে হরতাল-অবরোধ কী! তারা শুধু শুধু যন্ত্রণা বাড়ায়।

তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধে নেতাদের সংসার চলে; কিন্তু আমাদের মতো খেটেখাওয়া মানুষদের চলে না। জীবনের তাগিদে কর্মস্থলে ছুটে যাচ্ছি।

বন্ধু পরিবহনের চালক রেজাউল করিম বলেন, নতুনবাজার থেকে গুলিস্তান যাইতে কখনও দেড়ঘণ্টা, দুইঘণ্টাও লাগে। বিএনপির হরতাল-অবরোধের মধ্যেও তেমনি সময় লাগছে।

তিনি বলেন, শুধু শুধু হরতালের নামে সাধারণ মাইনষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। যে হরতাল সফল করতে পারবেন না, সেই রকম হরতাল দেওয়ার দরকার কী!

এ সময় গাড়িতে থাকা এক যাত্রী বলেন, হরতাল ডেকে ঘরে বসে থাকলে কী আর হরতাল পালন হয়! টাকার বিনিময়ে টোকাই ভাড়া করে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মেরে হরতাল সফল করা যায় না।
 
গুলিস্তান এলাকায় প্রাইভেটকারের এক চালক মিজান বাংলানিউজকে বলেন, আগে হরতালে মালিক রাস্তায় গাড়ি বের করতেন না। তবে এখন বের করেন। মালিককে অফিসে দিয়ে বাসায় যাচ্ছি। বিকেলে আবার অফিস থেকে নিয়ে আসবো।

ফার্মগেট এলাকায় ৮ নম্বর লোকাল গাড়ির চালক ইদ্রিস বলেন, শুধু শুনি, হরতাল। ঢাকার শহরে যে রকম যানজট, এতে হরতাল মনে হয় নাকি! তবে ভয় তো লাগেই!
 
তিনি বলেন, আগে হরতালে গাড়ি চালালে গ্লাস ভাঙতো। এখন যাত্রীসহ আগুন দেয়। যারা যাত্রীসহ গাড়িতে আগুন দেয়, তারা কোনো মানুষ হতে পারে না!

বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন ইয়ামিন খানম। তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের অবসান হওয়া প্রয়োজন। চাকরি করার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছি। তবে ঘরে ফিরে যেতে পারবো কিনা জানি না।

তিনি বলেন, ভয়, আতঙ্ক উপেক্ষা করেও মানুষ কাজের জন্য ছুটে যাচ্ছে। এই যানজট দেখেও নেতারা সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝতে পারছেন না। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তামাশা করার জন্য এমন হরতাল-অবরোধ ডাকেন তারা!

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।