হোটেল লেকশোর থেকে: ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে মদত দিতেই ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করা হয়। আর এর কারণ একটাই।
শনিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর হোটেল লেক শো’রে রিজিওনাল এন্টি টেরোরিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (আরএটিআরআই) আয়োজিত ‘সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, সংলাপ ও বাস্তবতা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরএটিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) একে মোহম্মদ আলী শিকদার। আলোচনা সঞ্চালনার দায়িত্বে আছেন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিনাত হুদা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহম্মদ মহসীন বলেন, কারা সন্ত্রাস করছে আমি তা জানি না। তবে সংলাপ হতেই হবে।
বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা বলেন, স্বাধীন দেশের রাজনীতি হবে গণমুখী। বর্তমানে যা হচ্ছে তা রাজনীতির কারণেই হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী তাদের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নেতাদের রক্ষা করার জন্য সহিংসতা করছে। আজ একজন ক্ষমতায় যেতে চান, আরেকজন ক্ষমতা ধরে রাখতে চান।
তিনি বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালে আমার কারণেই ছয় জঙ্গির ফাঁসি হয়েছিল। আমি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এজন্য দল ও দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, হরতাল অবরোধ যখন থাকে না, তখন ককটেল ও পেট্রোল বোমা থাকে না। হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এই জঙ্গিবাদ দিয়ে ইসলাম কায়েম করা যাবে না।
সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা সংলাপের কথা বলছে, তাদের কয়েকজনকে বসিয়ে দিন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ তাদের নির্বাচন থেকে শুরু করে কয়েকটি বিষয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার পর যদি একমত হতে পারেন তাহলেই বোঝা যাবে।
অ্যাডভোকেট এ এম আমিনুদ্দিন বলেন, আপনারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় সবাইকে চিহ্নিত করে চার্জশিট দিয়ে বিচারের আওতায় আনুন। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে সন্ত্রাস বন্ধ করা যাচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, এদেশে সহিংসতার রাজনীতি নতুন নয়। তবে এবারের বিষয়টি ভিন্ন। সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার রাজনীতি এদেশে ছিল না। যারা বলছে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে এটি হতো না, আসলে বিষয়টি এরকম নয়।
তিনি রাষ্ট্রের সুশাসন নিশ্চিত করে এসব সহিংসতকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘমেয়াদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক জাগরণের মাধ্যমে মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে।
বিকেএমইএ এর প্রথম সহ-সভাপতি এসএম আসলাম সানি বলেন, যখন আমরা স্বপ্ন দেখছি স্বাধীনতার ৫০ বছরে রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাবো, মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবো। সেই সময় রাজনীতির নামে যা হচ্ছে তাকে রাজনীতি বলা কঠিন।
তিনি বলেন, দেশ যদি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়, তাহলে যারা পশ্চাদপদ রাজনীতি করে তাদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে। বিএনপির মতো একটি দল জামায়াতের মতো দলের সঙ্গে রাজনীতি করায় তাদের ধ্যানধারণা পাল্টে যাচ্ছে। সমস্ত অধিকার ধ্বংস করে শুধু একটি অধিকার রক্ষা করা কঠিন।
আসলাম সানি বলেন, আমরা দেখেছি কিভাবে মাগুরা মার্কা নির্বাচন হয়েছে, কিভাবে ভুয়া ভোটার তৈরি করা হয়েছে। পদে পদে দুর্নীতির কারণে সমস্ত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে অবরোধ সত্ত্বেও গেল ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি ছিল ৫ শতাংশের বেশি।
গোলটেবিলের আলোচক প্যানেলে আছেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন অর রশিদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের ডিন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ক্রিমিনোলজি বিভাগের ডিন ড. জিয়া রহমান, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আহিদুজ্জামান চাঁন, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যপক ড. জিনাত হুদা, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল, জাপান স্টাডি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ প্রমুখ।
কূটনীতিক ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান, সাবেক মন্ত্রী জি এম কাদের, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, আবু হেনা, শহীদুল হক জামাল, গোলাম মাওলা রনি ও বাসদের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন।
ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ মওলানা জিয়াউল হাসান, শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পেশ ইমাম মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসুদ প্রমুখ।
সাংবাদিক ও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও অভিনেত্রী শমী কায়সার।
আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট স ম রেজাউল করিম, এম এম আমিনুদ্দিন ও অ্যাডভোকেট মো. মহসিন।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআই’র সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বিজিএমইএ’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি এসএম আসলাম সানি, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বারের বিশেষ উপদেষ্টা আব্দুল মতলুব আহমেদ, উইমেন চেম্বারের সাবেক সভাপতি সঙ্গীতা আহমেদ, বিজেএমইএ’র সাবেক সভাপতি শফিউল আলম মহিউদ্দিন ও আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ।
এই গোলটেবিল আলোচনার মিডিয়া পার্টনার দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এশিয়ান টিভি, একাত্তর টেলিভশন ও এসএ টিভি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৫/আপডেট ১২৫০ ঘণ্টা
** ব্যবসায়ীরা সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে
** এখন অ্যাকশনের সময়
** স্বাধীনতাবিরোধীদের মদত দিতেই ১৫ আগস্টের জন্মদিন
** বোমা বানানোর বিচার হচ্ছে না
** বর্তমানে যা হচ্ছে রাজনৈতিক কারণেই
** খালেদা কি গিনেস বুকে নাম লেখাতে চান
** যারা শুধু ভূ-খণ্ড চায় তাদের সঙ্গে সংলাপ নয়
** অর্থায়ন বন্ধ না হলে সন্ত্রাস চলতেই থাকবে
** পুড়িয়ে মারার রাজনীতি এদেশে ছিল না
** খালেদা পাকিস্তানের উত্তরসূরী
** আইএসআইএ’র অর্থায়নে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত
** সন্ত্রাস পরিহার করলেই সংলাপ
** বিএনপি জোট শুধুই সন্ত্রাস করছে
** সব ধ্বংস করে একটি অধিকার রক্ষা করা কঠিন
** রাজধানীতে ‘সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, সংলাপ ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা