বগুড়া: আর কখনো প্রায়োজন হবেনা অসুস্থ ছেলেকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার। ঘাতক ট্রাক চিকিৎসকের কাছে পৌঁছাতে দিল না মা ও ছেলেকে।
বগুড়া সদর উপজেলার বাঘোপাড়া বাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আফরোজা (২৫) ও তার ছেলে নুরুল ইসলাম নুরুকে (৫) উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় চা দোকাদার জেলী বেগম।
শনিবার (০৭ মার্চ) সোয়া সকাল ১০টায় বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বাঘোপাড়া বাজারে ট্রাক চাপায় আহত হন মা-ছেলে।
জেলী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, অসুস্থ ছেলে নুরুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য মা আফরোজা রিক্শার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন বাঘোপাড়া বাজারের একটি ফলের দোকানের সামনে। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক ওই ফলে দোকানের ওপর উঠে যায়। ওই ট্রাক চাপায় আফরোজা ও শিশু নুরুসহ পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
কথা বলতে বলতে অঝোরে পানি পড়তে থাকে জেলী বেগমের চোখ দিয়ে। তিনি বলেন, এমন অবস্থা যেন কোনোদিন কারও না হয়। কি বিভৎস দৃশ্য!
জেলী বেগম বলেন, জীবিকার তাগিতে দীর্ঘদিন ধরে রংপুর থেকে এসে এ এলাকায় চা বিক্রি করেন তিনি। অনেক দিন ধরে আফরোজার পরিবারের সঙ্গে চেনা জানা। আফরোজার স্বামী রুবেল ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে চালান। অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকমে তাদের সংসার চলে। বাঘোপাড়া বাজারের পাশেই তাদের বাড়ি।
সদর উপজেলার গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আব্দুল মান্নান বলেন, এ ঘটনার জন্য দায়ীদের যেন সুষ্ঠু বিচার হয়।
বগুড়া সদর উপজেলার বাঘোপাড়া বাজার এলাকায় মহাসড়কে টহলরত বিজিবি সদস্যরা ট্রাকটিকে থামানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু ট্রাকটি না থামিয়ে বেপরোয়া গতিতে চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা ফলের দোকানে উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আরো সাতজন আহত হন।
এদিকে ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা প্রায় সোয়া ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে প্রশাসনের লোকজন এসে তাদের সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
** বগুড়ায় ট্রাক চাপায় নিহত ৫, আহত ৭
বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৫