ঢাকা: সম্প্রতি বিসিএস ক্যাডারে উত্তীর্ণ এক নারী দেখা করেছেন। তার স্বামীও একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা।
এ উদাহরণের মধ্য দিয়েই সমাজে নারীর কর্মক্ষেত্রের স্বাধীনতার বিষয়টি বাংলানিউজের কাছে তুলে ধরলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন।
শনিবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বলেন, নারীদের অগ্রগতির বিষয়টি নারীদেরকেই সফল করতে হবে। আমাদের নারীরা এ সমাজের ছত্রছায়ায় যেভাবে সমঅধিকারের কথা বলছেন, কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের জন্যে নিজেকে তৈরি করছেন না।
নিজের সাফল্যের কথায় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদের এই কর্মকর্তা বলেন, দ্বায়িত্ব পালনের সময় কখনো নিজেকে নারী হিসেবে ভাবিনি। একজন কর্মকর্তা হিসেবেই বিবেচনা করেছি। নারী হিসেবে অন্যের চেয়ে বাড়তি সুবিধা চাইনি। কখনো বলিনি যে পারবো না।
তিনি বলেন, আমাদের নারীদেরকেও নিজেদের দ্বায়িত্বে কথা ভাবতে হবে। নিজেকেও পারতে হবে, তবে অন্যের চেয়ে বাড়তি সুবিধা চেয়ে নয়। বরং যোগ্যতার প্রমাণ রেখেই এগোতে হবে।
ফাহিমা খাতুন বলেন, আমাদের শিক্ষায় নারীর অগ্রগতি হয়েছে। প্রাথমিকে এখন নারী শিশুর অংশগ্রহণ বেশি, মাধ্যমিকে প্রায় সমান। উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষায়ও নারীর অংশগ্রহণ বেশ বড় সংখ্যার। তবে উচ্চ শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সামগ্রিকভাবে শিক্ষায় নারীর ৩৫ শতাংশ অংশগ্রহণ বড় অর্জন।
ফাহিমা খাতুন বলেন, শিক্ষায় নারীর যেভাবে অগ্রগতি হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে হয়নি। সমাজ এখনো নারীকে সমান সুবিধা দিচ্ছে না। সমাজ, পরিবার এমনি কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এখনো নারীর সহায়ক নয়। এখানে পরিবার থেকে এবং সহকর্মীর কাছ থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এখনো পাচ্ছেন না নারী। কর্মক্ষেত্রে শুধু সহকর্মী হিসেবেই নারীকে মূল্যায়ন করতে হবে।
ক্যারিয়ারের পেছন দিকে তাকালে সেখানে ফাহিমা খাতুনের রয়েছে সাফল্যের ধারাবাহিকতা। মাউশি’র মহাপরিচালক হিসেবে দ্বায়িত্ব নেয়ার পূর্বে তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে কর্মরত ছিলেন। বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের অধ্যাপক (সমাজবিজ্ঞান) ফাহিমা খাতুন সরকারি কলেজের শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতিরও সভাপতি। ১৯৫৭ সালের ৫ জুলাই জন্ম নেওয়া অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন এর আগে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন এবং ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজে অধ্যাপনা করেছেন।
ফাহিমা খাতুন বলেন, আমার সবচেয়ে বড় সহযোগিতা ছিল পরিবারের। এখানে আমার কেউ বাধা হয়নি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নারী শিক্ষায় উপবৃত্তি দিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। বিভিন্ন মাধ্যমের শিক্ষায় বিভিন্ন ধরনের প্রনোদনা দিচ্ছে। এখন নারীকেই এসব সুযোগ গ্রেহনের জন্যে নিজেকে তৈরি করতে হবে। আর পরিবার এবং সমাজকে করতে হবে সহায়তা।
ফাহিমা খাতুন বলেন, এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্যে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি বলা হয়েছে। রাষ্ট্রের সকল স্তরে নারীর অংশগ্রহণ যত বাড়বে, নারী তথা রাষ্ট্রেরই ততো অগ্রগতি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৫