ঢাকা: লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার সন্দেহভাজন প্রধান আসামি শফিউর রহমান ফারাবীকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকারীদের তালিকা তৈরি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ওই তালিকার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতারে অভিযানও শুরু হয়েছে।
রোববার (০৮ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) তদন্তে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর এফবিআই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সঙ্গেও তারা বৈঠক করেছেন। ’
‘তারা (এফবিআই) আমাদের কারিগরিসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন,’—যোগ করেন তিনি।
মনিরুল বলেন, ফারাবীসহ ১০জন বিভিন্ন সময় অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছেলেন। তাদের প্রত্যেককে পেশাদারি প্রক্রিয়া বজায় রেখেই গ্রেফতারের চেষ্টা চালছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এফবিআই-এর চার কর্মকর্তা মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে যান। সেখানে প্রায় ২০ মিনিটের মতো অবস্থান করেন তারা।
এরপর তারা যান মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে। সেখানে ডিআইজি পর্যায়ের দুইজন এবং একজন ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তাসহ চারজনের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন এফবিআই কর্মকর্তারা।
বৈঠক শেষে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে অভিজিৎ হত্যার আলামতও দেখেন তারা।
সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আল-আমিন বাংলানিউজকে বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রায় একঘণ্টা এফবিআইয়ের দলটি সিআইডিতে ছিল। এ সময় তাদের সঙ্গে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।
তবে তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
সিআইডি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আবারও মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে যায় এফবিআই প্রতিনিধি দল।
সেখানে পুনরায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। পরে বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিবি‘র যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের ধারণা উগ্রবাদী সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। হত্যার পর দায় স্বীকার করা আনসার বাংলা সেভেন কিংবা আনসারুল্লাহ বাংলাটিম, জেএমবি অথবা আইএসও হতে পারে।
‘তবে তারা যেই হোক, গ্রেফতার করা হবে,’—বলেন মনিরুল।
এর আগে শনিবার (০৭ মার্চ) সকালে নিহত অভিজিতের বাবা অজয় রায়ের সঙ্গেও কথা বলেন এফবিআই প্রতিনিধি দল।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসি এলাকায় লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান অভিজিৎ রায়। আর গুরুতর আহত হন স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।
বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে তাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৫, আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা