ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘মৌলবাদ-সন্ত্রাসবাদ নারীর জন্য বড় বাধা’

ঊর্মি মাহবুব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৫
‘মৌলবাদ-সন্ত্রাসবাদ নারীর জন্য বড় বাধা’ শিরিন আক্তার

ঢাকা: মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে বর্তমানে নারীদের সামনে বড় বাধা বলে মনে করছেন শ্রমিকনেত্রী শিরিন আক্তার এমপি। নারীদের সামনে এগিয়ে চলার পথের নানা বাধা ও নারীদের নানামুখি সম্ভাবনা নিয়ে নারীদিবসে তিনি কথা বলেছেন বাংলানিউজের সাথে।



‘কয়েক বছর আগেও নারীরা নিশ্চিন্তে তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও নানা কাজে বাইরে বের হতেন এখন আর তা তারা পারছেন না। মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ নারীকে ভাবিয়ে তুলছে। বোমা, পেট্রোল বোমার ভয়ে অভিভাবকরা তাদের বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছেন না নিরাপত্তার অভাবে। ফলে পিছিয়ে পড়ছেন নারীরা’—বলেন তিনি।

শিরিন আক্তার বলেন, ‘মৌলবাদীরা নারীদের পায়ে কেবলই বেড়ি পরিয়ে রাখতে চায়। হেফাজতে ইসলাম নেতা আল্লামা শফি নারীদের নিয়ে যে ভাষায় কথা বলেছেন তা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। একজন নারী কখনো মা, কখনো বোন, কখনো সন্তান আর কখনো বা সহধর্মিনী। অথচ তাদেরই  ‘তেঁতুল’ বললেন শফি। মৌলবাদীদের এ ধরনের প্রচারণা বন্ধ করতে হলে নারীদেরই প্রতিবাদী হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। ’

প্রশাসনের আন্তরিকতার পরও পুরুষশাসিত সমাজে নারীর প্রতি নেতিবাচক, বৈষম্যপ্রবণ মানসিকতার কারনেই অনেক সময় নারীর অধিকারকে অধিকার হিসেবেই মূল্যায়ন করা হচ্ছে না বলে জানিয়ে এই শ্রমিকনেত্রী ও সংসদ সদস্য বলেন,  ‘ নেতিবাচক মানসিকতা ও আইন না মানার প্রবণতার কারণে অনেক সময় নারী অবহেলার শিকার হচ্ছে। এসব বিষয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের আরো কঠোর অবস্থান নেওয়া উচিত।

‘নারীর বর্তমানে বড় একটি সমস্যা হচ্ছে তথ্যের অভাব’—এই অভিমত তুলে ধরে এই শ্রমিকনেত্রী  বলেন, ‘নারীরা মাত্র শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। তারা শ্রমআইন জানে না. মানবাধিকার ও নিজেদের সাংবিধানিক অধিকারের অনেক কিছু জানে না। পুরুষশাসিত সমাজ বলে তারা অনেক সময় সামাজিকভাবে অনেক পিছিয়ে থাকে। জানার বিষয়গুলো রাষ্ট্র, প্রশাসনসহ সবাইকে দায়িত্¦ নিয়ে করতে হবে। ’

বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন বলে মন্তব্য করে শিরিন আক্তার বলেন, বর্তমান সরকার নারীর সচেতনতা বাড়িয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। অনেকাংশ সময়ই তারা সফল। কারণ আজ থেকে ১০ বছর আগে যে পরিস্থিতি ছিলো এখন আর তা নেই। তখন সামাজিক বাধা আরো প্রকট ছিলো। নারীরা রাস্তায় আন্দোলন করলে তাদের দিকে মানুষ আঙুল তুলতো। এখন এসব সমস্যা অনেকাংশেই কমেছে।

দেশের এমন কোনো খাত নেই যেখানে নারীর সরব পদচারণ নেই। শুধু দেশের ভেতরেই নয় অভিবাসী নারীশ্রমিকদের রক্ত ঘাম করা শ্রমের সুবাদে দেশে আসছে কোটি কোটি টাকার রেমিটেন্স। আর এসব বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহৃত হচ্ছে দেশেরই উন্নয়নের কাজে। তাছাড়া পোশাকশিল্প, চিংড়ি শিল্প, সেবাখাতসহ দেশের অন্যতম শিল্পগুলোর বেশিরভাগ শ্রমিকই নারী। তাই নারীদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে।

নারী অধিকার নিশ্চিত করতে ও সামনে এগিয়ে চলার পথ সুগম করতে শিরিন আক্তার মানসিকতা পরিবর্তনের সাথে বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন আইনের সঠিক প্রয়োগের ওপর। তিনি বলেন, নারীর প্রতি অবিচারই হোক বা অবজ্ঞাই হোক একমাত্র আইন অমান্যকারী বা আইন লঙ্ঘনকারীদের মাধ্যমেই হচ্ছে। তাই নারীদের সচেতনতা বাড়ানোর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারীর অধিকার বাস্তবায়ন ও শ্রম আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। তবেই এ সমস্যা অনেকাংশে সমাধান করা সম্ভব  হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।