ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় বিত্তবান!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৫
ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় বিত্তবান! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও স্থানীয় মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ এলাকায় বিত্তবান হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভূমিহীন ও সুবিধাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দ পাচ্ছেন তিনি।

 

ডেপুটি কমান্ডার মফিজ উদ্দিনও বেশ স্বচ্ছল। পৌর এলাকায় তার রয়েছে কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি। নিজের গ্রামের বাড়িতেও বানিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্য, ভূমিহীনের তালিকায় রয়েছেন মফিজও। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রকৃত হতদরিদ্র ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধারা।

জানা যায়, প্রতি বছর উপজেলা প্রতি ভূমিহীন ও সুবিধাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বাড়ি নির্মাণের বরাদ্দ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। চলতি বছর প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে বরাদ্দ ধরা হয়েছে আট লাখ টাকা। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ই-টেন্ডারের মাধ্যমে তাদের নামে প্যাকেজ দরপত্র আহ্বান করে।

সূত্র মতে, সেলিম ও মফিজ উদ্দিন ছাড়াও এ তালিকায় সহকারী কমান্ডার ছলিমুল্লাহ মোস্তফা, আসাদুল্লাহ লালু, আবু সাঈদ, আইয়ুব আলী, মমিন, আজিম উদ্দিন, আ. ওয়াদুদ ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সেলিনার নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্র ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা জহুর উদ্দিন জানান, একটি খুপড়ি ঘর ছাড়া তার কিছুই নেই। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করলেও, নির্বাচিত তালিকায় তার নাম ওঠেনি।

কুকসাইর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাইজ উদ্দিনেরও একই ক্ষোভ, আমাদের মতো অস্বচ্ছল ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে কেউ তাকায় না! তারা কোনো সময়ই সুযোগ-সুবিধা পান না। এ কারণে জীবনের শেষ বয়সে ছেলের ভাঙা ঘরেই থাকতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম আহমেদ জানান, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল বারী এ তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন। পর্যায়ক্রমে সব মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

অবশ্য মুঠোফোনে সাবেক সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল বারী দাবি করেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা মিলে এ তালিকা দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয় হওয়ায় সেটি আর কাটছাট করা হয়নি। তবে বিতর্ক থাকলে এটি সংশোধন করে নতুন তালিকা পাঠানো যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।