ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

প্রকৃতির আবহে গড়া প‍ূজামণ্ডপ

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৫
প্রকৃতির আবহে গড়া প‍ূজামণ্ডপ ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ছোট্ট একটি লেক। লেকের ওপর বাঁশের সাঁকো।

চারিপাশে কাশফুল। আর হালকা দমকা হাওয়া। যেন প্রাণ ভরে যাবে! জলে রাজহাঁসের খেলা; হোক না প্রতীকী। তাতে কী! অন্যদিকে ফুলের টবে নানান ফুলগাছ, পাতাবাহার। শহরের মধ্যে এমন নিরিবিলি পরিবেশে ঘুরতে আর মায়ের পূজায় মগ্ন হতে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে!

রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড় থেকে একটু এগিয়ে ৩শ’ ফিট রাস্তার পাশে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকে শারদীয় দুর্গোৎসবে পূজামণ্ডপের এমন দৃশ্য। এখানে আসা পূণ্যর্থীরা পূজা-অর্চনার পাশাপাশি এমন প্রাকৃতিক পরিবেশের আবহ পেয়ে মন ও শরীর জুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শহরের অন্য মণ্ডপের চেয়ে ব্যতিক্রমভাবে সাজানো হয়েছে এটি। তাই মণ্ডপ আর এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করছে সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অন্য ধর্মের লোকজন।

লেকের পাশে সেলফি তুলতে ব্যস্ত ফার্মগেট থেকে আসা রুপক, সমীর, পলক, স্নিগ্ধা ও প্রিয়তী। স্থানটি স্মরণীয় করে রাখতে সেলফি আর ক্যামেরায় ছবি তোলা তাদের।

রুপক বাংলানিউজকে জানান, রাজধানীর বেশ কয়েকটি মণ্ডপ ঘুরেছি। কোথাও এমন পরিবেশ নেই। মণ্ডপের পাশে লেক আর নিরিবিলি পরিবেশ খুবই ভালো লাগছে।

স্নিগ্ধা বলেন, মাসি মিন্টু রানীর ফোনে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি এ মণ্ডপে এমন পরিবেশ। এসেই থ। এতো সুন্দর লেক। ইচ্ছে করছে নেমে সাঁতার কাটি!

রাতুল বলেন, প্রতিবছর ঝিনাইদহের বাড়িতে উৎসব উদযাপন করি। ব্যস্ততার কারণে যাওয়া হয়নি। এক বন্ধুর কথায় কালকে রাতে এ মণ্ডপে এসেছি। আজও এলাম। মণ্ডপের ছাড়াও বেশি ভালো লাগছে এখানকার সার্বিক পরিবেশ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে। খোলামেলা এমন পরিবেশে পূজার উৎসবের সঙ্গে লেক, কাশবন বাড়তি আনন্দ যোগাচ্ছে বলে যোগ করেন রাতুল।

প্রতি বছর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দেখতে গেলেও এবার দাদা, বৌদি, দু’মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর-১ থেকে এসেছেন কিশোর কুমার। তিনি বলেন, পরিবেশ আর এতো জায়গাজুড়ে মণ্ডপ খুবই ভালো লাগছে। সড়কের পাশে হলেও সুনশান নীরবতা, লেকের পাড়ে বসে মণ্ডপের সৌন্দর্য দেখা।

মণ্ডপে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছেন মানিকগঞ্জ থেকে আসা নারায়ণ চক্রবর্তী ও গৌতম চক্রবর্তী। দর্শনার্থী আর নিরিবিলি পরিবেশ দেখে তিনিও খুশি।

পুরোহিত নারায়ণ বাংলানিউজকে জানান, পর্যাপ্ত জায়গা আর প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে হওয়ায় ভক্তদের আরাধনায় মনোনিবেশ বেশ ভালো।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৩শ’ ফিট রাস্তার পাশেই বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজা কমিটির আয়োজনে চলছে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব।

বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজা কমিটির সহকারী প্রচার সম্পাদক রাজিব দাস গুপ্ত বাংলানিউজকে জানান, বসুন্ধরার সহায়তায় এখানে প্রথম আয়োজন। খোলামেলা পরিবেশ, বড় জায়গা আর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য দর্শনার্থীদের ভিড় এখানে বেশি।

রাজিব বলেন, মণ্ডপের গেইট দুর্গা মায়ের প্রতীক দিয়ে সাজানো। ব্যতিক্রমী আলোক সজ্জায় রাতে উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করছে।

প্রবেশ পথেই ২টি মেটাল ডিটেক্টর, ২৪টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো আয়োজনের এলাকা এবং ভেতর-বাহির তদারকিসহ ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান রাজিব।

কমিটির সহ-সভাপতি প্রকৌশলী অজয় কুমার দাস বসুন্ধরা এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থী এখানে আসছেন। প্রতিদিন গড়ে ৫-৭ হাজার মানুষ হচ্ছে। পূজা-অর্চনার, পূণ্যর্থীদের খাওয়ানোর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে।

আইন-শৃংখলার দায়িত্বে থাকা আনসার পিসি রাজিব মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, পুলিশ, আনসারের সমন্বয়ে দৈনিক ২২/২৩ জন সদস্য নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টাই বসুন্ধরার নিজস্ব নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টিম কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৫
আরইউ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।