ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সিরাজগঞ্জে ৪ জেএমবির আদালতে স্বীকারোক্তি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৫
সিরাজগঞ্জে ৪ জেএমবির আদালতে স্বীকারোক্তি

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) গ্রেফতার হওয়া সাত সদস্যের মধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে সিরাজগঞ্জে জেএমবি সংশ্লিষ্টতার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।



বুধবার (২১ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান এসপি মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ।

তিনি জানান, সম্প্রতি পাবনার ঈশ্বরদীতে ধর্মযাজক লুক সরকারকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর পুলিশি অভিযানে পাবনা থেকে ৪জন, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, সদর ও কাজিপুর উপজেলা থেকে ৭ জনকে আটক করা হয়।

সিরাজগঞ্জে আটক হওয়া ৭ জেএমবি সদস্যদের মধ্যে ৪ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

এরা হলো, সদর উপজেলার শাহানগাছা গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে শোয়াইব হোসেন বাবু (১৯), ভেওয়ামারার শাহজামালের ছেলে সুলতান মাহমুদ (৪৫), চর ছোনগাছার আবুল কাশেমের ছেলে কলেজ ছাত্র মোতালেব হোসেন (২৪) ও কাজিপুর উপজেলার বরইতলী গ্রামের মৃত শুকুর মাহমুদের ছেলে হযরত আলীকে (৩৩)।

আটক অন্যরা হলো, উল্লাপাড়া উপজেলার রাগববাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের দুই ছেলে ওমর আলী (২৮) ও ইদ্রিস আলী (৩২) এবং সদর উপজেলার চরছোনগাছার আবুল কাশেমের ছেলে কলেজ ছাত্র মাহমুদুল হাসান (২২)।
 
পুলিশ সুপার আরও জানান, স্বীকারকোক্তিমূলক জবানবন্দীতে ৪ জেএমবি জানিয়েছেন জেলহাজতে থাকা বরিশালের জসিম উদ্দিন রহমানির জিহাদী ওয়াজ, বিভিন্ন দেশের জঙ্গিদের জিহাদী ভিডিও, জঙ্গি প্রশিক্ষণের ভিডিও ও বক্তব্যসহ বিভিন্ন ধরনের বই, ম্যাগাজিন, পত্রিকা, লিফলেট ইত্যাদি সংগ্রহ করে ধর্মভীরু সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ, নতুন সদস্য সংগ্রহ, জিহাদের জন্য উজ্জীবিত এবং প্রলুব্ধ করার কাজে লিপ্ত ছিল।

তারা জিহাদী কার্যক্রম জোরদার কল্পে এবং জিহাদী প্রশিক্ষণের নিমিত্তে নিজেদের মধ্যে মাসিক চাঁদার ভিত্তিতে তহবিল সংগ্রহ করতো। দেশের অভ্যন্তরে মুশরেক, মুর্তাদ, তাগদ, নাস্তিকসহ সব ধরনের ইসলাম বিরোধী ব্যক্তিদের নির্মূল করে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।

অপেক্ষাককৃত গরীব পরিবারের ছেলেদের এ পথে আনতে জেএমবি’র সিনিয়র সদস্যরা ভূমিকা পালন করছে। সদস্য সংগ্রহের পর চট্টগ্রাম ও দেশের বাইরে ট্রেনিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে।

তবে নতুন সদস্যদের সঙ্গে সিনিয়ররা ফ্লেক্সিলোডের দোকানের মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ রক্ষা করায় তাদের সর্ম্পকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি নতুনরাও সিনিয়রদের সর্ম্পকে তেমন তথ্য জানে না।

২০০৪ ও ২০০৭ সালে জেলায় এদের কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেলেও মাঝখানে তারা অনেকটা নিস্ক্রিয় ছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবারও তারা নতুন সদস্য সংগ্রহে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ৭জনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে সিরাজগঞ্জ জেলায় সক্রিয় আরও ২৭ জেএমবি সদস্যের নাম পাওয়া গেছে। তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রেস বিফ্রিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ, অতিরিক্ত পুলিশ জিয়াউল হাসান তালুকদার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম, ডিবি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামানসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

১১ অক্টোবর উল্লাপাড়া থানা পুলিশ উপজেলার রাঘবাড়িয়া গ্রাম থেকে ওমর আলী, ইদ্রিস আলী ও শোয়াইব হোসেন বাবু গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার ভেওয়ামারা থেকে সুলতান মাহমুদ, চরছোনগাছার মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতার করে। এদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ অক্টোবর ডিবি পুলিশ আবুল কাশেমের আরেক ছেলে কলেজ ছাত্র মোতালেব হোসেন ও কাজিপুর উপজেলার বরইতলী গ্রামের মৃত শুকুর মাহমুদের ছেলে হযরত আলীকে গ্রেফতার করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৫
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।