ধুনট (বগুড়া): পানি কমতে থাকায় বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বাঙালি নদীতে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ফরিদপুর গ্রামের আরো নয়টি পরিবারের বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বাঙালি নদীর পূর্ব পাড়ে নতুন করে ভাঙনের ঘটনা ঘটে।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো হলো- ফরিদপুর গ্রামের বজলু মিয়া, লাল চাঁন, শফিকুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, বিশা মিয়া, সিরাজ উদ্দিন, ফয়সাল হোসেন, আকিমুদ্দিন ও সিরাজ উদ্দিন আকন্দ।
এ নিয়ে সাত দিনে ফরিদপুর গ্রামের ২৩টি পরিবারের বাড়িঘর বাঙালি নদীগর্ভে বিলীন হলো।
এর আগে ১৬ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত আব্দুল কাফি, সেকেন্দার আলী, হাফিজার রহমান, মোহাম্মদ আলামুদ্দি, সামছুদ্দিন, নালু মিয়া, সুটকু মিয়া, সুফিয়া বেগম, বজলুর রশিদ, নায়েব আলী, গোফার আকন্দ, জাবেদ আলী, আব্দুল গফুর ও আবু সাঈদের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়।
এছাড়া ভাঙনের আশঙ্কায় একই গ্রামের নদী তীরবর্তী প্রায় ২৫টি বাড়ি নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন পরিবারের লোকজন।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, ধুনট উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে বহমান বাঙালি নদী। প্রায় দুই দশক ধরে বাঙালি নদীর ফরিদপুর গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়ে। সর্বশেষ গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তখন বাঙালি নদীর ভাঙনে ফরিদপুর গ্রামের ৪০টি পরিবারের বসতভিটা ও আবাদি জমি বিলীন হয়।
এরপর নদীর পানি বেড়ে ভাঙন থেমে যায়। বর্তমানে নদীর পানি কমতে শুরু করায় আবার নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ফরিদপুর গ্রামের বকুল হোসেন জানান, বিশ বছর ধরে বাঙালি নদীর ভাঙনে নিঃস্ব এই গ্রামের মানুষ। প্রতি বছরই দফায় দফায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। নদী ভাঙনের ফলে এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আবাদী জমি ও বসতভিটা হারিয়েছে।
উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা রিপন বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাঙালি নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্ত ভাঙন রোধে সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য সরকারি কোনো সহায়তাও মিলছে না।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা চেয়ে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা বিতরণ করা হবে বলে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বাঙালি নদীর ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে এ বিষয়টি পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের অবহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৫
আরএ