সিলেট: শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনে ৫ জনসহ দুই দিনে মোট ৯ আসামির পক্ষে-বিপক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শোনেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম, ময়না, পাবেল ও শামীমের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন আইনজীবীরা। তাদের পক্ষের সরকারি আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট শাহ আলমকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার অন্য চার আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করবেন আদালত।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শওকত আলী বলেন, আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণকালে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছিলেন, রাজনকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ভুয়া। অখচ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তারা বলছেন, যারা ভিডিওচিত্রে ছিলেন না তারা নির্দোষ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব সাংবাদিকদের বলেন, দু’দিনে ৯ জনের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার কামরুলসহ অন্য চারজনের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।
এর আগে রোববার (২৫ অক্টোবর) এ মামলায় ৩৪২ ধারায় আসামিদের মতামত গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শুরু হয়। প্রথম দিন ৬ আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতে তাদের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য তুলে ধরেন।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ গুম করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হন কামরুলের ভাই মুহিত আলম। নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। খুনিদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে জনতা।
নিহত রাজন সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর মহানগরীর জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মুহিত আলমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার অভিযোগে বরখাস্ত হন জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, এসআই জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার।
এর আগে মুহিত আলমসহ আটজন এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর একই আদালতের বিচারক চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করেন।
গত ১ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ কার্যদিবসে মোট ৩৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। কামরুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ অক্টোবর ১১ জন সাক্ষী ফের সাক্ষ্য দেন তার উপস্থিতিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৫
এনইউ/এএসআর