ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহতের দাবি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৫
নীতি প্রণয়নে তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহতের দাবি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে তামাক কোম্পানির প্রভাব প্রতিহত করতে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে গাইড লাইন প্রণয়নের দাবি উঠেছে।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর তোপখানা রোডে আনসারী ভবনের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এবং বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি ওঠে।



‘এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ ও তামাক কোম্পানিগুলোর আইন লঙ্ঘন’ শীর্ষক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য রাখনে বেসরকারি সংস্থা দি ইউনিয়ন’র কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, মাদকবিরোধী সংগঠন  প্রত্যাশা‘র সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতির ( নাটাব) প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ কে এম খলিলউল্লাহ, স্কোপের নির্বাহী পরিচালক এনায়েত হোসেন প্রমুখ।

সভায় সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আমিন-উল-আহসান।

মূল প্রবন্ধে মো. আমিন-উল-আহসান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার নানা অপকৌশল প্রতিহত করতে এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ অত্যন্ত শক্তিশালী একটি হাতিয়ার। এ হাতিয়ারকে কাজে লাগিয়ে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বেগবানকরণে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে গতিশীল করতে এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কে দক্ষতা ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সচেষ্ট থাকবে ।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বিশ্বব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলে (এফসিটিসি) প্রথম স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ। তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখলেও তামাক কোম্পানিগুলোর প্রতারণামূলক নানা কার্যক্রমের ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। এজন্য তামাক কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, এফসিটিসি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এ চুক্তির উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী সব ধরনের তামাকের ব্যবহার সীমিত করার লক্ষ্যে কিছু সার্বজনীন মাত্রা নির্ধারণ করা, আর এর মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাক গ্রহণের কারণে উদ্ভূত মারাত্মক স্বাস্থ্যগত, সামাজিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। এফসিটিসিতে স্বাক্ষরকারী হিসেবে বাংলাদেশ এর আর্টিকেলগুলো বাস্তবায়নের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।

হেলাল আহমেদ বলেন, এফসিটিসির ৫. ৩ আর্টিকেলে উল্লেখ আছে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্য নীতি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে জাতীয় আইন অনুযায়ী তামাক কোম্পানির বাণিজ্যিক এবং অন্য কায়েমি স্বার্থ থেকে এই নীতিমালা রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে। তামাকজাত দ্রব্য এবং তামাক কোম্পানিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনেই রাষ্ট্রগুলোর এ সংক্রান্ত কার্যক্রম অবশ্যই প্রকাশ্য ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হতে হবে।

সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এফসিটিসিতে স্বাক্ষরের পরবর্তী সময়ে আইন প্রণয়ন, সংশোধনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও কৌশলী ও প্রয়োজন অনুসারে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্যের সব নীতিতে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখা সরকার ও প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য।

সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় হৃদরোগজনিত বাতজ্বর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, দি ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ইউনিভর্সিটি অব হেলথ সায়েন্স, একলাব, প্লাটফরম অব ড্রিম ফর বেটার বাংলাদেশ, স্বপ্নের সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, নাটাব, স্কোপ, টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), প্রফেসর (ড.) ওবায়দুল্লাহ ফেরদৌসী ফাউন্ডেশন, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে), প্রত্যাশা, মানবিক, প্রজ্ঞা, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা (গাস), আধুনিক প্রভৃতি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।