ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘বিদেশি, এএসআই হত্যা ও হোসেনী দালানে হামলার উদ্দেশ্য এক’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৫
‘বিদেশি, এএসআই হত্যা ও হোসেনী দালানে হামলার উদ্দেশ্য এক’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: সরকারকে চাপে ফেলার জন্যই দুর্বৃত্তরা সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ড, এএসআই হত্যা এবং হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনা বিচ্ছিন্ন হলেও মূল উদ্দেশ্য একটাই, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা ও সরকারকে চাপে ফেলা’।

 

সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পযন্ত আন্দোলনের নামে দেশে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করেছিলো তাদের সঙ্গে ইতালিয়ান নাগরিক হত্যাকারীদের কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামন মিয়া বলেন, রাজধানীর গাবতলীতে পুলিশের এএসআই হত্যা ও হোসেনি দালানে বোমা হামলার দু’টি ঘটনা একটি মহল ঘটিয়েছে। আর ইতালিয়ান নাগরিক তাভেলা সিজারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে অন্য একটি মহল।  

এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা হত্যায় ঘটনাস্থল থেকে এক আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য মতে পরদিন রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্যসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তিনি বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলায় যে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে ওই কামরাঙ্গীর চর থেকে উদ্ধার করা বিস্ফোরকের পুরোপুরি মিল পাওয়া গেছে।
 
কোনো প্রকার বিরাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে তদন্ত করা হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই দু’টি ঘটনার তদন্তে কিছু বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে। তার ভিত্তিতেই আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি যে এএসআই হত্যাকাণ্ড ও হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনাটি একই সূত্রে গাঁথা। হামলাকারীরা একই গোষ্ঠীর।

তাভেলা সিজারের হত্যাকান্ডের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

তাভেলা হত্যার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, একটি কুচক্রি মহল সরকারকে আর্ন্তজাতিক চাপে ফেলার জন্যই এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। তবে এ ঘটনায় জঙ্গি সংগঠনের কোনে সংশ্লিষ্টতা নেই। এই মহলের উদ্দেশ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে বর্হিবিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা।

ইতালিয়ান নাগরিক তাভেলা সিজারের হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাস্থলসহ আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ ও প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন,‘তাভেলা হত্যার ঘটনায় কোনো জঙ্গির সংশ্লিষ্টতা নেই’।

তিনি বলেন, তাভেলা সিজারের মূল হত্যাকারীদের আড়াল করতেই জঙ্গি সংগঠন ‘আইএস’ এর নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, হত্যার দায় স্বীকার করে যে ওয়বেসাইটটি ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো হয়েছে সেটি ‘আইএস’র ওয়েবসাইট নয়। আইএস’র ওয়েবসাইটটি একটি ওপেন সাইট, হিডেন নয়।  

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান, মো. দিদার আহম্মদ, যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মীর রেজাউল আলম, যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম ও কৃঞ্চপদ রায়, ডিএমপি’র উপ-কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, রোববার (২৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গুলশানে ইতালির নাগরিক তাভেলা সিজারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন-মো. রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল আরিফিন রাসেল, তামজিদ আহমেদ রুবেল এবং শাখাওয়াত হোসেন (শরীফ)।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৫
এসজেএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।