ঢাকা: মেরিন শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে বর্তমান সময়ের তরুণরা। শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কারণেই গত পাঁচ বছরে স্থাপিত হয়েছে বেশকিছু বেসরকারি মেরিন একাডেমি।
বাংলাদেশ সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ১৮টি বেসরকারি মেরিন একাডেমির মধ্যে মাত্র ৭ টিতে কার্যক্রম চলছে। কেমব্রিজ মেরিটাইম একাডেমি, ওয়েস্ট ওয়ে মেরিন একাডেমিসহ ৮টি মেরিন একাডেমি তাদের ভর্তি প্রক্রিয়াই বন্ধ করে রেখেছে।
অন্যদিকে একাডেমিক কার্যক্রম চলমান আছে মাত্র ৭টি মেরিন একাডেমিতে। এগুলো হলো- শাহ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউট, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম একাডেমি, আটলান্টিক মেরিন একাডেমি, বে-মেরিন ইন্সটিটিউট, ওশান মেরিটাইম একাডেমি, মাস মেরিন একাডেমি, ইউনাইটেড মেরিন একাডেমি। এসব মেরিন একাডেমিতে প্রায় ৫০০ মেরিন শিক্ষার্থী রয়েছে।
এছাড়া ৩টি মেরিন একাডেমি অনুমতি পেলেও এখনও কার্যক্রম শুরুই করতে পারেনি। কার্যক্রম শুরু করতে না পারা একাডেমিগুলো হলো- মেরিনা একাডেমি, এশিয়ান মেরিটাইম একাডেমি ও ইউএস বাংলা মেরিটাইম একাডেমি।
সংশ্লিষ্টদের মতে, হঠাৎ একাডেমি বন্ধ করে দেওয়া বা অনুমতি পেয়েও কার্যক্রম শুরু না করতে পারা পুরো মেরিন শিক্ষাখাতের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের মেরিনারদের ইমেজ নষ্ট হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অভাব, নেতিবাচক প্রচারণা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে টিকতে পারছে মেরিন একাডেমিগুলো।
আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি মেরিনারদের চাহিদা রয়েছে বলে জানা যায় বাংলাদেশ সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর থেকে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি বছর বাংলাদেশের কয়েক হাজার নতুন ক্যাডেটের কর্মসংস্থান করা সম্ভব। এতে দেশের কর্মক্ষম মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা আয়ের বড় উৎস হতে পারে এই মেরিন একাডেমিগুলো। এক্ষেত্রে সরকারি মেরিন একাডেমি থেকে বছরে ৩০০ থেকে ৪০০ মেরিন ক্যাডেট পাস করে। মেরিন ক্যাডেটের আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটানো সম্ভব বেসরকারি খাতকে সহায়তার মাধ্যমে।
এ ব্যাপারে কথা হয় শাহ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ এম আই চৌধুরীর সঙ্গে।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কোনো খাতই রাতারাতি প্রতিষ্ঠিত হয় না। একটি খাত প্রতিষ্ঠিত হতে হলে সময় লাগে। বাংলাদেশে পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠিত খাত হিসেবে তৈরি হতে ৩০ বছর সময় লেগেছে। বাংলাদেশের মেরিন খাত একদিন একইরকম প্রতিষ্ঠিত হবে। যারা এ খাতে বিনিয়োগ করছেন তাদের উচিত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে খাতটি পরিচালনা করা।
শাহ এম আই চৌধুরী আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে লক্ষাধিক মেরিনার দরকার। সেখানে আমাদের মেরিনার আছে ৫ হাজারের কাছাকাছি। বিশ্বের মেরিনার চাহিদা পূরণ করছে ফিলিপাইন। আমরা যদি মেরিনার তৈরি করতে পারি তাহলে আমরাও বিশ্ববাজারে আমাদের অবস্থান তৈরি করে নিতে পারব। তাই এ খাতে সবার সহায়তা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
ইউএম/এমজেএফ/