খুলনা: পশ্চিম সুন্দরবনের বনদস্যু ও জলদস্যু ইলিয়াছ বাহিনীর সদস্য শাহীনুর সরদার ওরফে শাহীনকে (৩৪) আটক করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)-৬ সদস্যরা।
এ সময় পশ্চিম সুন্দরবনের কয়রা উপজেলার গহীন বনে অভিযান চালিয়ে ২৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ৫৩১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাতভর অভিযান চালিয়ে এ অস্ত্র ও গোলাবারুদের ভাণ্ডার উদ্ধার করে র্যাব।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টায় খুলনার লবণচরা র্যাব-৬’র সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৬’র অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে র্যাব-৬ জানতে পারে খুলনার কয়রা থানাধীন সুন্দরবন অঞ্চল খুলনা রেঞ্জ এলাকার বাদুরঝুলি খাল এলাকায় কতিপয় জলদস্যু অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে লে. কমান্ডার এম. মাহফুজুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাব-৬’র একটি বিশেষ দল বাদুরঝুলি খাল এলাকায় অভিযান চালায়।
অভিযানে জলদুস্য ইলিয়াছ বাহিনীর সঙ্গে র্যাব-৬’র সদস্যদের প্রায় ১০ মিনিট গুলিবিনিময় হয়। এক পর্যায়ে জলদস্যুরা পিছু হটে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এ সময় র্যাব সদস্যরা ইলিয়াছ বাহিনীর সদস্য জলদস্যু শাহীনুর সরদার ওরফে শাহীনকে আটক করা হয়।
আটক শাহীন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মুড়োগাছা গ্রামের মৃত ফারুক সরদারের ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি এইট শুটার গান ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের গহীন জঙ্গলে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা জলদস্যু ইলিয়াসের বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার অস্ত্রের মধ্যে ৭টি ডাবল ব্যারেল বন্দুক, ৯টি সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক, ৫টি পয়েন্ট টুটু এসএ রাইফেল, তুরস্কের তৈরি ১টি এইট শুটার গান ও ১টি থ্রি নট থ্রি রাইফেল এবং পয়েন্ট টুটু রাইফেলের গুলি ১ হাজার রাউন্ড, বন্দুকের গুলি-৪৩৭ রাউন্ড, থ্রি নট থ্রি রাইফেলের গুলি-৮৫ রাউন্ড ও ৭.৬২ রাইফেলের গুলি ৯ রাউন্ড।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুন্দরবনসহ বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকায় বনদস্যু, জলদস্যুদের দমনের লক্ষ্যে র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। র্যাব-৬, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার অন্তর্গত সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যু ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
পশ্চিম সুন্দরবন এলাকায় বর্তমানে দুর্ধর্ষ দস্যু ইলিয়াছ বাহিনী, রাজু বাহিনী, জাহাঙ্গীর বাহিনী, আনারুল বাহিনী ও আমির আলী বাহিনীর তৎপরতা রয়েছে। এ বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে র্যাব-৬’র অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকা বনদস্যু ও জলদস্যু মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-১) লে. কমান্ডার এম মাহফুজুল ইসলাম ও অ্যাডজুটেন্ট (সিনিয়র এএসপি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫/আপডেট ১৩০০ ঘণ্টা
এমআরএম/জেডএস