ঢাকা: জুবায়ের আহমেদ। বয়স লুকিয়ে নির্ধারিত বয়সের আগেই ভোটার হয়েছেন।
জুবায়ের ভোটার হওয়ার সময় জন্ম তারিখ লিপিবদ্ধ করেছেন ১ অক্টোবর ১৯৮৯। ফলে তার জাতীয় পরিচয়পত্রেও একই জন্ম তারিখ এসেছে। আর এসএসসি সনদে জন্ম তারিখ উল্লেখ করেছেন ১ আগস্ট ১৯৯৬।
এসএসসি সনদের সঙ্গে তার জন্ম তারিখের মিল না থাকায় বর্তমানে নানা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জুবায়ের। তাই অবৈধভাবে ভোটার হয়েছেন বলে নিজেই সহজ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এজন্য ক্ষমাও চেয়েছেন ইসির কাছে। কিন্তু তার এ সহজ স্বীকারোক্তির সহজ কোনো সমাধান নেই। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিলে বরং মামলায় পড়বেন এ যুবক- বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শুধু জুবায়ের আহমেদই নন, প্রতিনিয়তই এমন সমস্যায় পড়াদের সমাধানের জন্য আসতে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনে। তাদের বেশিভাগই ভুয়া (অপ্রাপ্ত বয়সেই ১৮ বছর বয়সী হয়েছেন উল্লেখ করে) জন্ম সনদ দিয়ে ২০১২ সালে বা তার আগে ভোটার হয়েছেন। তাদের কেউ কেউ এসএসসি পাস করার পর পরই, কেউবা আগেই ভোটার হয়েছেন। কিন্তু বিভিন্ন সেবা নিতে গিয়ে এসএসসি সনদ ও এনআইডি কার্ডের সঙ্গে জন্ম সনদের মিল না থাকায় কাঙ্খিত সেবা নিতে পারছেন না এখন। কিংবা ভবিষ্যতে আরো সমস্যায় পড়ার আশঙ্কায় ইসি কার্যালয়ে ঘোরাঘুরি করেন তারা। কিন্তু এ নিয়ে কোনো কর্মকর্তারই আর কিছু করার থাকে না।
জুবায়ের আহমেদও তাদের একজন এমন মন্তব্য ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এমন অনেকেই ২০১২ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ভোটার হয়েছেন। কিংবা তারও আগে হয়েছেন। যা এখন কোনোভাবেই সংশোধন করা যাবে না। আদালতই কেবল এর সমাধান দিতে পারেন। ইসি পারে অপরাধীর শাস্তি দিতে।
সম্প্রতি জুবায়ের আহমেদ ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বরাবর একটি আবেদন করেছেন। যার একটি অনুলিপি বাংলানিউজের হাতেও এসে পৌঁছেছে। তিনি এতে উল্লেখ করেছেন-‘আমি নির্ধারিত বয়সের আগে অজ্ঞতাবশত ভোটার হয়েছিলাম যা আমার এসএসসি সনদের সঙ্গে মিল নেই। এজন্য বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থী। উক্ত ভুলের জন্য ক্ষমা করে এনআইডি সংশোধন করত জনাবের মর্জি হয়’।
আবদনের সঙ্গে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার এনআইডি নম্বর হচ্ছে-২৬৯৪২৬১৬৪৪৮০৬। ঠিকানা, ৮৭/২, হরনাশ ঘোষ রোড, লালাবাগ, ঢাকা। জুবায়েরের পিতা মিজানুর রহমান, মাতা শাহিদা রহমান।
ভোটার নিবন্ধন আইনের ১৮ ধারা অনুযায়ী, ‘যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো লিখিত বর্ণনা বা ঘোষণা প্রদান করেন যা মিথ্যা বা তিনি মিথ্যা বলে জানেন বা বিশ্বাস করেন বা সত্য বলে বিশ্বাস করেন না, তাহলে তিনি অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক দুই হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন’।
ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নির্ধারিত বয়সের আগেই কেউ ভোটার হলে তা একটি অপরাধ। আগে সচেতনতা ছিল না বলে আমরা ছাড় দিয়েছি। তবে এখন আর কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
ইইউডি/এএসআর