সিলেট: শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আগামী ৮ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ২টা ১৫ মিনিটে রায়ের দিন ধার্য করেন মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা।
বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী।
এর আগে সকালে রাজন হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে চার আসামির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক হয়। প্রধান আসামি কামরুল ইসলামের পক্ষে অ্যাডভোকেট আলী হায়দার ফারুক, চৌকিদার ময়না মিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান এবং পলাতক দুই আসামি পাভেল ও শামীম আহমদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ আলম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী।
দুপুর পৌনে ১২টায় মামলার ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
রোববার (২৫ অক্টোবর) এ মামলায় ৩৪২ ধারায় আসামিদের মতামত গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শুরু হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন কার্যদিবসে ১৩ আসামির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। অন্য ৯ আসামি হচ্ছেন- প্রধান আসামি কামরুলের ভাই মুহিত আলম, অপর ভাই আলী হায়দার, দুলাল আহমদ, রাজনকে হত্যার ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ, আয়াজ আলী, আজমত উল্লাহ, ফিরোজ আলী, তাজ উদ্দিন বাদল ও রুহুল আমিন।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ গুম করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হন কামরুলের ভাই মুহিত আলম। নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। খুনিদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে জনতা।
নিহত রাজন সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর মহানগরীর জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মুহিত আলমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার অভিযোগে বরখাস্ত হন জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, এসআই জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার।
এর আগে মুহিত আলমসহ আটজন এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর একই আদালতের বিচারক চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করেন।
গত ১ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ কার্যদিবসে মোট ৩৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। কামরুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ অক্টোবর ১১ জন সাক্ষী ফের সাক্ষ্য দেন তার উপস্থিতিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫/আপডেট ১৪৩৬ ঘণ্টা
এনইউ/বিএস/এএসআর