ঢাকা: প্রবাসীদের মধ্যে এখনও ৪ লাখ বাংলাদেশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) হাতে পায়নি বলে জানা গেছে। নির্ধারিত সময় ২৪ নভেম্বরে মধ্য বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর হাতে এমআরপি তুলে দিতে তৎপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসী কলাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৮ম বৈঠকের আলোচনায় এসব বিষয় উঠে আসে।
কমিটির সভাপতি নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন, কমিটির সদস্য প্রবাসী কলাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি, মো. ইসরাফিল আলম, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান, দিদারুল আলম ও মো. আয়েন উদ্দিন।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মো. ইসরাফিল আলম বাংলানিউজকে বলেন, এখনও ৪ লাখ প্রবাসী এমআরপি পায়নি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সবার হাতেই এমআরপি পৌঁছে দিতে পারবে বলে মন্ত্রণালয় আশ্বস্ত করেছে।
যে কোম্পানি এমআরপির দায়িত্বে ছিল তারা ঠিকমত কাজ করেনি। তাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজেই দায়িত্ব নিয়ে প্রবাসে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে দায়িত্ব দিয়েছে এমআরপি প্রণয়নে।
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান অ্যাসোসিয়েশনের (আইকাও) বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী আসছে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে হাতে লেখা পাসপোর্টের বদলে পৃথিবীর সব দেশের নাগরিকদের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) থাকতে হবে। বিদেশে যারা পুরনো পাসপোর্ট নিয়ে অবস্থান করছেন তাদের দেশে ফিরে আসতে সমস্যা হবে না। তবে ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বরের পর প্লেনযোগে অন্য দেশ যেতে চাইলে অবশ্যই এমআরপি পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী ৩৫ লাখ প্রবাসীদের হাতে এমআরপি দিতে ২০১০ সালের ১ এপ্রিল পাসপোর্ট এমআরপিকরণ শুরু হয়।
এদিকে আগামী ২/৩ নভেম্বর বাংলাদেশে আসছে মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করে শ্রমিক নেওয়ার ব্যপারে তাদের পরামর্শ দেবে বলে জানা গেছে।
মালয়েশিয়ায় জি টু জি পদ্ধতিতে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অভিবাসী কর্মী পাঠানো হচ্ছে না বলে মনে করছে কমিটি। এজন্য জি টু জি পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি আরো দ্রুততার সাথে করার বিষয়ে স্থায়ী কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে অনুমতি নিয়ে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮১২ জন কর্মী কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গমন করেছেন।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি-২০১৫ প্রণয়নের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও বৈঠকে জানানো হয়। রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের আচরণ বিধি এবং তাদের কার্যক্রমের ভিত্তিতে এজেন্সিসমূহের শ্রেণীকরণের বিষয়টিও পরীক্ষাধীন রয়েছে, নতুনভাবে প্রণয়নকৃত আইন, বিধি ও নীতিমালার মাধ্যমে এজেন্সিসমূহকে নজরদারির মধ্যে এনে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন কমিটির সদস্যরা।
এদিকে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলো থেকে যেন কোনো লোক ভুয়া সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে না পারে মন্ত্রণালয়কে সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। একই সাথে প্রশিক্ষকদের শিক্ষার মান উন্নত করা এবং প্রশিক্ষকদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধির বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সুপারিশ করা হয়।
বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানো এবং বিদেশগামী কর্মীরা যাতে মধ্যসত্বভোগীদের খপ্পরে পরে প্রতরণার শিকার না হয়, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।
বৈঠকে প্রবাসী কলাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
এসএম/এমজেএফ/