ঢাকা: মোবাইল কলের ওপর আরোপিত সারচার্জ ও লেভি শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অর্জিত অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের জন্য টয়লেট নির্মাণের ব্যবহার করার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন কমিটির এক সদস্য।
কমিটি সদস্য ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মোবাইল ফোন থেকে আরোপিত সারচার্জ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের জন্য টয়লেট স্থাপনের কথা বলেছেন। তবে অর্থমন্ত্রী তার এই প্রস্তাবে বলেছেন নির্দিষ্ট একটি সেক্টরে নয়, যেখানে প্রাচীর নির্মাণের প্রয়োজন সেখানে সেটি করতে হবে।
এ নিয়ে কমিটির প্রায় সব সদস্য একমত হয়েছেন বলেও জানান ফরহাদ হোসেন। বৈঠকে কমিটির সবাই বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে আলোকপাত করেছেন বলেও জানান তিনি।
ভবিষতে এই সারচার্জ আরো বাড়ানো যায় কি না সেটা ভেবে দেখতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী।
কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা যায়, প্রতি বছর প্রায় ১৪০ কোটি টাকা আদায় হবে সারচার্জ থেকে। মোবাইল ফোন কোম্পানি ১০০ টাকার কল থেকে ১ টাকা এ খাতে দেবে। তবে কোনোভাবেই গ্রাহকদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করা যাবে না বলেও কমিটি সদস্যরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান কমিটির সদস্যদের জানিয়েছেন, সারচার্জ অটোমেটেড পদ্ধতিতে আরোপিত হবে। এতে গ্রাহকদের সংঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কোনো গ্রাহকের কাছ থেকেই বাড়তি এই টাকা আদায় করা হবে না।
এছাড়া বৈঠকে ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) বিল, ২০১৫’ এর ওপর আলোচনা করা হয়। এতে বলা হয় মোবাইল ফোন ব্যবহাকারীরা যেসব সেবা নেন তার মূল্যের ওপর ১ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা হলে বছরে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা সারচার্জ আদায় করা সম্ভব হবে যা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে ব্যয় করা যায়। তবে উক্ত অর্থ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মাণের মতো কাজে ব্যবহার করার সুপারিশ করা হয়।
১ নম্বর সাব-কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম আরও কার্যকর করতে শিগগিরই জনবল নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এছাড়াও মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে গুরুত্ব অনুযায়ী ট্র্যাক্স লিয়াঁজো অফিস স্থাপন এবং মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত ২৭ ধরনের অপরাধ তদন্তে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কর্তৃত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে সাব-কমিটি।
কমিটি এ সমস্ত সুপারিশসমূহ বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।
কমিটির সভাপতি সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, মো. আব্দুল ওয়াদুদ, টিপু মুন্সি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও আখতার জাহান।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
এসএম/এমজেএফ/