ঢাকা: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাউজক) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জিএম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ও ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজাসহ মোট ৫ জনকে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গুলশানে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার সম্পত্তি রাজউকের একটি চক্র জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানের প্রয়োজনে তাদের তলব করা হয়।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে দুদকের উপ-পরিচালক এস এম রফিকুল ইসলাম তাদের কাছে বাহক মারফতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠান। নোটিশে আগামী ১ নভেম্বর প্রয়োজনীয় নথি এনে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে।
যাদের নথিপত্রসহ তলব করা হয়েছে তারা হলেন, রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জিএম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, ইউনাটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, পরিচালক (এস্টেট) নাজমুস সাদাত সেলিম, রাজউকের সদস্য (এস্টেট) আবদুল হাই।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী পরস্পর যোগসাজশে গুলশানে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার সম্পত্তি মূল কাগজপত্র ছাড়াই নামজারি করেছেন মৃত ব্যক্তির নামে। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, প্যাকেজ ডিলিংয়ের আওতায় পুরো কার্যক্রম সম্পাদিত হয় ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে।
দুদক সূত্র জানায়, ১৯৬১ সালে মোহাম্মদ কেরামত আলী রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে ব্লক- এন (এ) বাড়ি নং-৩, রোড নং-৭২-এর ৫১ কাঠা জমি লিজ বরাদ্দ পান। বর্তমানে এ প্লটের মূল্য প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা। কেরামত আলী মারা যাওয়ার পর বিভিন্নজন এর বৈধ উত্তরাধিকার দাবি করে নামজারির চেষ্টা চালান। এসব উত্তরাধিকারের ২ জন কেরামত আলীর পুত্র মজিবুর রহমান ও হাবিবুর রহমান। তাদের কাছ থেকে বায়নাসূত্রে আবদ্ধ হন চিত্র পরিচালক ফারুক ঠাকুরের স্ত্রী তাপসী রাবেয়া। তিনি ওই প্লটের বর্তমান দখলদার বলে দাবি করছেন।
বিতর্কিত এ প্লট নিয়ে রিট, সিভিল রিভিশনসহ ১২টির বেশি মামলা চলছে। এসব মামলার প্রেক্ষিতে (সিভিল পিটিশন নং-৭৭/২০১৩,৭৯৮/২০১৩, ৭৯৯/২০১৩ ও ৮০০/২০১৩) উচ্চ আদালত স্থিতিবস্থা জারি করে। মামলাগুলো নিষ্পত্তি না করেই ‘ইউনাইটেড গ্রুপ’র কর্মকর্তা পরিচয়ে আবুল কালাম আজাদ ২৭ ব্যক্তিকে ‘বৈধ উত্তরাধিকার’ দেখিয়ে নামজারির চেষ্টা চালান। এর মধ্যে কথিত ৭ নম্বর ওয়ারিশ ফারহানা রহমান ইতিমধ্যে মারা গেছেন-মর্মে রাজউকের নথিতে উল্লেখ রয়েছে।
এ অবস্থায় মামলা নিষ্পত্তি না করেই মৃত ব্যক্তিসহ ২৭ জনের নামে নামজারির পক্ষে মতামত দেন রাজউকের আইন কর্মকর্তা মারুফ হাসান। আইনি মতামতের ভিত্তিতে ভুয়া ওয়ারিশদের পক্ষেই নামজারি করেন রাজউকের এস্টেট ও ভূমি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ এসব অভিযোগ দুদকে পেশ করা হলে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি দমন সংস্থাটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এডিএ/এমজেএফ