ঢাকা: রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার দু’টি ব্লাড ব্যাংক ও দু’টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে নয়জনকে ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এসময় ব্লাড ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অপরীক্ষিত ও ভেজাল মিশ্রিত রক্ত জব্দ করে ধ্বংস করা হয়।
চার প্রতিষ্ঠানের নয়জন হলেন- জেনারেল ব্লাড ব্যাংক, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানের মো. রবিউল শাহিন (৩৮), মো. ওমর ফারুক (৩৮), মো. রবিউল হাসান (৪৮), মো. হাফিজুর রহমান (৩৮), মো. ফজলে রাব্বি মিয়া (২৬), হলি ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. কিবরিয়া মিয়াজি (৪৭), রিদম ব্লাড ব্যাংকের মো. নাজমুস সাকিব (২৩), এ জি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মো. আ. গফ্ফার খাঁন (৫০) ও মো. দেওয়ান আল মোমিন (২৮)।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-২ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া ভেজাল মিশ্রিত রক্ত রাখার দায়ে এবং নানা অনিয়মের কারণে দু’জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
র্যাব-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না নিয়েই অবৈধভাবে অধিক মুনাফার আশায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই পেশাদার, রোগে আক্রান্ত ও মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে আসছে।
এদিকে, হলি ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সফিউশনে ভেজাল দ্রব্য ও পুরনো রক্তের সঙ্গে স্যালাইনের পানি মিশিয়ে একাধিক ব্যাগ তৈরি করতেও দেখা গেছে।
তিনি বলেন, মাদকাসক্তদের কাছ থেকে সংগৃহীত রক্তে তরল স্যালাইন মিশিয়ে এক ব্যাগ রক্তকে দু’তিন ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি করে আসছে তারা।
ব্লাড সংরক্ষণ করার জন্য ব্লাড প্রিজারভিশন রেফ্রিজারেটর ব্যবহার না করেই সাধারণ ফ্রিজে রক্ত সংরক্ষণ করে আসছিলো। এছাড়াও ব্লাড স্ক্রিনিং ক্রস ম্যাচিং না করা, রে-এজেন্ট খোলা জায়গায় রাখা ও ব্লাড ব্যাগে সোর্স ও ডোনারের প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকাসহ নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রক্ত সংরক্ষণ এবং সরবরাহ করে আসছে।
তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৫২ ধারা ও নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন ২০০২ এর ১৮ ধারা মোতাবেক ডা. এ জি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মো. আ. গফ্ফার খাঁনকে (৫০) এক বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড এবং হলি ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সফিউশনের মো. কিবরিয়া মিয়াজিকে (৪৭) এক বছর কারাদণ্ডসহ প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়।
অপরদিকে জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংযুক্ত পাঁচজনকে সাত লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দেওয়ান আল মোমিনকে (২৮) এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাস কারাদণ্ডসহ প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। রিদম ব্লাড ব্যাংকের মো. নাজমুস সাকিবকে (২৩) বিশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
র্যাব-২ এর উপ-পরিচালক ড. মো. দিদারুল আলমের নেতৃত্বে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ডা. সামিউল ইসলাম সাদী’র উপস্থিতিতে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এ অভিযান পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এসজেএ/এএ