ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সাংবাদিকের নির্যাতনের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা ইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
সাংবাদিকের নির্যাতনের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা ইসি

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) শাখার কর্মকর্তাদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা সংস্থাটি। অথচ নিজ কর্মকর্তাকে নির্যাতনের ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বারবার তাগাদা দিচ্ছে ইসি।


 
চলতি বছরের আগস্ট মাসে সিলেটের ধিরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নিতে ইসির এনআইডি শাখায় আসেন। সে সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হলে তাকে মারধর করে এনআইডি শাখার কর্মকর্তারা।
 
পরবর্তীতে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুই কর্মকর্তাসহ এক আনসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলে ইসি। কিন্তু সে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এনআইডি শাখার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীনকে বুধবারও (২৮ অক্টোবর) তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে।

ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সাবেদ উর রহমান স্বাক্ষরিত ওই তাগাদাপত্রে বলা হয়েছে, আনসার হুমায়ুন কবীর, এনআইডি শাখার আইডিইএ প্রকল্পে এসেস ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট সুব্রত কুমার রাহুত ও এসেস ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েট মো. মমতাজুল হকের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ইসি সচিবালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত গৃহীত ব্যবস্থার কোনো পত্র পাওয়া যায়নি। তাই তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা অত্র সচিবালয়কে অবহিত করতে পুনরায় নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
 
এদিকে গত ১৯ আগস্ট বেসরকারি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের দুই সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেই ইসির। এছাড়া অজানা কারণে সে প্রতিবেদনের বিষয়ে মুখও খুলছেন না কেউ।
 
সূত্রগুলো জানিয়েছেন, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় এনআইডি শাখার টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। এনআইডি শাখার আইডিইএ প্রকল্পের উপ-পরিচালক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে তারাই সাংবাদিক জিএম মুস্তাফিজুল আলম ও ক্যামেরাপার্সন রিপু আহমেদকে মারধর করেছিলেন।
 
তদন্ত প্রতিবেদনেও এ বিষয়গুলো উঠে এসেছিল। আর যেদিন (০৭ অক্টোবর) এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল, সেদিনই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আগাম নোটিশ না দিয়েই, বেতন না বাড়ানোর অজুহাতে কর্মবিরতিতে যান। শুধু তাই নয়, ইসির তথ্য ভাণ্ডারের সুইচও তারা বন্ধ করে দেন। ফলে দিনভর ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন সেবাগ্রহীতারা।

এনআইডি মহাপরিচালক সংবাদিক নির্যাতনের দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, তদন্তের ভিত্তিতেই দোষীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো কিছুই হয়নি।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসি কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে বলেন, এভাবে সাংবাদিক মারধরের ঘটনা নজিরবিহীন। আর যারা জড়িত আছেন, তারা ইসিকে জিম্মি করে ফেলেছেন। কেননা, তারা শুরু থেকে এ প্রকল্পের কাজ করছে। ফলে ওদের যে দক্ষতা রয়েছে, তা নতুন করে কাউকে নিয়োগ করা মাত্রই পাওয়া সম্ভব নয়। আর এই দূর্বলতার সুযোগই কাজে লাগাচ্ছেন দায়ী কর্মকর্তারা।
 
তবে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় এনআইডি শাখা থেকে ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে হুকুমদাতা আব্দুল বারীকে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।