বগুড়া: এইতো কিছুদিন আগেও হিংস্র মূর্তি ধারণ করেছিল যমুনা। পানিতে ফুলে ফেপে উঠেছিল যমুনার বুক।
তারপর কেটে গেছে মাসখানেক। এর মধ্যে এসব এলাকার পরিবর্তনও হয়েছে চোখে পড়ার মতো। কৃষকের স্বপ্ন ডোবানো সে পানি জমির উর্বরতা বাড়িয়ে দিয়ে গেছে কয়েকগুন। জমির উপরিভাগে রেখে গেছে পলিযুক্ত মাটির বিশাল স্তর। আর এ মাটিকে কাজে লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। মরিচ বুনে চেষ্টা করছেন ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার।
জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলা সদর, কাজলা, কর্নিবাড়ী, বোহাইল, চালুয়াবাড়ী ও হাটশেরপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকরা বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। চরাঞ্চলে উৎপাদিত এ মরিচের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক ও কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
কর্নিবাড়ী ইউনিয়নের শোনপচা চরের মরিচ চাষি এমদাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, এবছর তিনি ৭ বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমির বিপরীতে বীজ, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচ মিলে মোট ১৩ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে।
তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমি থেকে ৫ মণ হারে শুকনো মরিচ পাওয়া সম্ভব। আর এরকম ফলন হলে প্রতি বিঘায় তার কমপক্ষে দ্বিগুন লাভ হবে। তখন বাজার যেমনই থাক না কেন এই লাভের কোনো মার নেই।
কথা হয় কাজলার চরের মুকুল মাস্টার, নিশ্চিতপরল চরের মোফাজ্জল হোসেন প্রামাণিক, শংকরপুর চরের জামাল মোল্লাসহ একাধিক মরিচচাষির সঙ্গে।
এসব কৃষক বাংলানিউজকে জানান, চরাঞ্চলে এমনিতেই ভালো মরিচ হয়। এরপর এবছর বন্যা হওয়ার কারণে জমির উপরিভাগে পর্যাপ্ত পলিযুক্ত মাটির স্তর পড়েছে।
ফলে জমির উর্বরতা শক্তি অনেক বেড়ে গেছে। তাই এবছর মরিচের ফলন অনেক ভালো হবে বলে তারা মনে করেন। মরিচের দাম বরাবরই ভালো পান। এবারো পাবেন বলে আশা।
চাষিরা জানান, দেশের বিভিন্ন নামি-দামি মসলা উৎপাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে এখানকার মরিচ সংগ্রহ করে। আর মসলা তৈরির কাজে এই উপজেলার মরিচকে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাধান্য দেয়। এ কারণে চাষ করা মরিচের উপযুক্ত মূল্য পাওয়া যায়। সঙ্গে তারাও তুলনামূলক বেশি লাভবান হন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, গতবছর এ উপজেলায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছিল। এ বছর আরও বেশি জমিতে মরিচের চাষ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
এমবিএইচ/এএ