ঢাকা: রংপুরে জাপানের নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডে এক বিএনপি নেতার জড়িত থাকার বিষয়ে এখন নিশ্চিত তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কুনিও হোশির ব্যবসায়িক সহযোগী হুমায়ুন কবির ওরফে হীরা বুধবার রংপুরের আমলি আদালতে এ হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৩ অক্টোবর রংপুর শহরের কাছে কাচু আলুটারি গ্রামে খুন হন কুনিও হোশি। আর হত্যাকাণ্ডের পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে হুমায়ুনকে আটক করে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলেছে, দুই দফায় হুমায়ুনকে ২৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার পর বুধবার তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জেলা পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রগুলো বলেছে, বুধবার সন্ধ্যার পর হুমায়ুনকে কাউনিয়া আমলি আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি হাকিম শফিউল আলমের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে হুমায়ুন তার ভাই কামালের সঙ্গে বিএনপির নেতা হাবিব-উন নবীর যোগাযোগের কথা বলেছেন। তারা পরস্পর যোগসাজশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন ও হুমায়ুন বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন বলে স্বীকার করেছেন।
কুনিও হোশি হত্যা মামলায় প্রথম দফায় ৫ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত রিমান্ডে ছিলেন হুমায়ুন। এরপর একই মামলায় ১৪ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে।
রংপুর শহরের ধাপ এলাকায় গত ১৫ জুলাই র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ভাই মানিক ও সুমন নিহত হওয়ার ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ হুমায়ুনকে রিমান্ডে নেয়।
এদিকে বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে রাজনৈতিকভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, হুমায়ুন কবির ও তার শ্যালকের ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখা হচ্ছে। হুমায়ুনের ওই শ্যালক একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কুনিও হোশি হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত হুমায়ুনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যজন মহানগর বিএনপির সদস্য রাশেদ-উন-নবী খান ওরফে বিপ্লব। তাকেও ৫ অক্টোবর ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রাশেদ-উন-নবী বিএনপি নেতা হাবিব-উন-নবীর ভাই।
ইতালির নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যার ২৮ দিনের মাথায় ২৬ অক্টোবর এর রহস্য উন্মোচনের কথা বলেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওই ঘটনায় একটি মোটরসাইকেলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ বলেছে, এক ‘বড় ভাইয়ে’র নির্দেশে তারা তাবেলাকে হত্যা করেছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। এই হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা ওই চারজনের মধ্যে তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল সেদিনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২৭ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সেই নির্দেশদাতা ‘বড় ভাই’ হলেন বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আবদুল কাইয়ুম।
বাংলাদেশ সময় ০৯৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
এমএমকে