জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলো সবসময় আকর্ষণীয়।
কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে লেকগুলো সৌন্দর্যহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনের দু’টি ছোট লেক, সুইমিং পুলের পাশের লেক, মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশের লেক, বিশমাইল এলাকায় একটি বড় লেক, আল বেরুনী হলের পাশের লেক, পুরাতন কলা ভবনের পাশের লেক, মেডিকেল সেন্টারের সামনের লেকগুলো ঘাস, লতা-পাতা ও কচুরিপানা পরিপূর্ণ।
এতে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি মশার উপদ্রবও বেড়েছে। এতে স্থানীয়দের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একইসঙ্গে অপরিষ্কার এ লেকগুলো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যহানির অন্যতম কারণ বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় এস্টেট অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি লেকের মধ্যে ৫টি লেক ইজারা দেওয়া হয়েছে। তিনটি লেক অতিথি পাখির জন্য রাখা হয়েছে ইজারামুক্ত। বাকি লেকগুলো ইজারামুক্ত থাকলেও সেগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন জানান, যে লেকগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে সেগুলোর মালিকানা অস্থায়ী ভিত্তিতে পরিবর্তন হওয়ায় ইজারাদারদের সঙ্গে আলোচনা না করে এগুলো সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।
জানা যায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকার বড় একটি লেক কচুরিপানায় ভরে যাওয়া অনেক মাছ মারা যায়। এতে আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লেকে কিছু অংশের কচুরিপানা পরিষ্কার করা হলেও তার মাত্র কয়েকদিন পর আবারও সেই আগের অবস্থাতেই ফিরে আসে। বাকি লেকগুলোরও একই অবস্থা।
এদিকে প্রশাসনের উদাসীনতায় এ সৌন্দর্য হারাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসনাত আল মাহাদী বলেন, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য লেকগুলো সংস্কার প্রয়োজন। এছাড়া ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র্য, মাছসহ জলজ প্রাণীর জীবন রক্ষার জন্যও লেকগুলো পরিষ্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন বলেন, কিছু লেক ইজারা দেওয়ায় সেগুলো সংস্কার করা যাচ্ছে না। মিলনায়তনের পাশের লেক দু’টি মজা লেক। আমরা বরাদ্দ পেলে সেই লেক দু’টি সংস্কার করবো।
এছাড়া অন্য লেকগুলো সংস্কারের বিষয়ে এস্টেট অফিসের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে শীতে অতিথি পাখি আসার আগেই লেকগুলো সংস্কার করে সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের উদ্যোগ প্রত্যাশা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
আরএইচএস/এএ