ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

গাজীপুরে গলা কেটে শিশু হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
গাজীপুরে গলা কেটে শিশু হত্যা নাজনীন আক্তার

গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় চরপাড়া এলাকায় জবাই করে এক স্কুল ছাত্রীকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত নাজনীন আক্তার (৭), স্থানীয় চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী এবং আক্কাছ আলীর মেয়ে।



বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক  মো. আমিনুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নানী মিনুজা বেগমের সাথে বসতঘরে ঘুমিয়ে ছিল নাজনীন আক্তার। রাত ২টার দিকে পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে তিন দুর্বৃত্ত দরজা খুলে দিতে বলে ধাক্কা দেয়। এক পর্যায়ে নানী দরজা খুলে দিলে তিনজন লোক ঘরে ঢুকে নাজনীনকে  ঘুম  থেকে তুলে টেনে বাইরে নিয়ে যায় ।

এ সময় নানী টেনে ধরলে তাকে ঘরে রেখে বাইরে থেকে দরজায় ছিটকিনি আটকে দেয়। এ সময় নানীর চিৎকার করতে থাকেন। পরে ভোর চারটার দিকে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশী এক মহিলা ঘরের দরজা খুলে দেন। নানী তাকে সব ঘটনা খুলে বলে এবং নাতনির খোঁজে ঘর থেকে বের হন। এ সময় তিনি ঘরের অদূরে বারান্দায় নাজনীনের জবাই করা দেহ দেখতে পান। পরে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দিলে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে নিহতের পিতা মো. আক্কাছ আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে নাজনীনের মা আসমা বেগম দ্বিতীয় বিয়ে করে স্থানীয় সলিং মোড় এলাকায় দ্বিতীয় স্বামীর কাছে চলে যান। চকপাড়া এলাকায় নাজনীনের নানা হাসমত আলী হাসু, নানী মিনুজা বেগম ও মামা রিপন মিয়া নাজনীনকে নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার রাতে নানা হাসু টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রিপন ছিলেন ঢাকায়। বাড়িতে শুধু নানী ও নাতনি ছিলেন।

নিহতের মামা রিপন মিয়া জানান, প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় আব্দুল করিম ও  আব্দুল কাদির মধ্যস্থতা করে রিপনের বাবা হাসমত আলী ওরফে হাসুর চকপাড়ার প্রায় ১১শতাংশ জমি শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার এমদাদুল হকের কাছে বিক্রি করে দেন। এ সময় তারা তার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা নিয়ে অন্যত্র জমি কেনার আশ্বাস দেন এবং চকপাড়ায় তাদের জমিতে তিন কক্ষের একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেন। টাকার বদলে ওই বাড়িসহ কিছু জমি হাসুর কাছে বিক্রিরও প্রতিশ্রুতি দেন তারা। পরে ওই বাড়িতেই বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েকবছর পর ওই বাড়িসহ জমি রেজিস্ট্রির করার জন্য চাপ দিলে করিম ও তার ভাই কাদির নানা তালবাহানা শুরু করেন এবং ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে করিমদের সাথে রিপনদের বিরোধ চলছিল। দেড় বছর আগে ষড়যন্ত্র করে আমাকে একটি মোটর সাইকেল চুরির মামলা আসামি করে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়। নাজনীন হত্যার ঘটনায় তাদের হাত রয়েছে। তাকে হত্যা করে আমাদের ওই বাড়ি ছাড়ার চক্রান্ত করছে তারা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।