ঢাকা: কেউ একজন শয্যাশায়ী আর আরেকজন সেবা দিচ্ছেন— ঠিক হাসপাতালের একটি বেডের এমন দৃশ্য তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছে অমর কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ছেলে নিষাদ হুমায়ুন।
আঁকা বাঁকা অঙ্কনে আরেকটি শিশু যা এঁকেছে তা প্রথম দর্শনে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
শিশুদের চেতনায় যে এত চিন্তা যে খেলা করে তা তুলির এমন আঁচড় না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হতো। আর একেকটি ছবির ভেতরে কত যে গল্প ছড়িয়ে দিয়েছে শিশুরা তা দেখে অভিভূত বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুনিরুজ্জামান।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নানা আয়োজন ছাপিয়ে সবার নজর কেড়েছিলো শিশু মনের জ্বলে ওঠা বাতিগুলো। সেই বাতি যেন বিচ্ছুরিত হচ্ছে বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রের চিত্রশালায় একেকটি ক্যানভাসে।
এসময় শিশুদের আঁকা ছবি এবং দৃষ্টিনন্দন মৃৎশিল্পের প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন মুনিরুজ্জামান। নিজেই রঙ তুলি দিয়ে নৌকায় বাতিঘর আঁকিয়ে দেখান তিনি।
এসময় মনিরুজ্জামান বললেন, ‘শিশুদের চাপ দিয়ে ছবি আঁকানো নয়, ওদেরকে ওদের মতো আঁকতে দিতে হবে। ওরাই ফুটিয়ে তুলবে ওদের ছবির জগৎ।
চিত্রশালার রঙ তুলির আঁচড় শেষে দ্বিতীয় তলায় শিশুদের কথা সুর ও ছন্দের পরিবেশনায় ছিলো ব্রিটিশদের ভারত বর্ষে আগমন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস। সুকুমার রায়ের অসুখী রাজা গল্প অবলম্বনে এটি নাটক করে তারা।
অনুষ্ঠানে বাতিঘরের শিশুদের জন্য ‘সুকুমার পাঠাগার’ উদ্বোধন করেন প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক অসীম সাহা, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, অভিনেত্রী ও পরিচালক মেহের আফরোজ শাওন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শুরুতে বক্তব্য রাখেন- বাতিঘরের পরিচালক তামান্না সেতু এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাতিঘরের অধ্যক্ষ মেহদী হাসান শোয়েব।
শোয়েব বলেন, এই শহরের অভিভাকরা তাদের শিশুদের কি দিচ্ছেন? শিশুদের মনে যদি মা মাটি আর মাতৃভূমি গড়ে না ওঠে তাহলে সে দেশপ্রেমিক মানুষ হতে পারবে না। বাতিঘর চায় দেশ, মা আর মাতৃকাকে চিনিয়ে দেওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
আরএম/পিসি