ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কক্সবাজারে পর্যটক মাতাবে ক্যারাভ্যান

তুষার তুহিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৫
কক্সবাজারে পর্যটক মাতাবে ক্যারাভ্যান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার: উন্নত বিশ্বে ক্যারাভ্যান একটি পরিচিত নাম হলেও ‍আমাদের দেশে অত্যাধুনিক এই গাড়ির প্রচলন হয়নি এখনও।

তবে বাংলাদেশের পর্যটকদের আশার বিষয় বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে ‘ক্যারাভ্যান ট্যুরিজম’।



পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে ইতোমধ্যে কক্সবাজার শহরে আনা হয়েছে চারটি ক্যারাভ্যান। এ মাসের শেষে যোগ হবে আরও ৬টি। চলতি মাসের মধ্যেই ক্যারাভ্যানগুলো কক্সবাজারে পর্যটকদের সমাদৃত করবে।

এ বিষয়ে দেশে একমাত্র ক্যারাভ্যান আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান নেপচুন হেলিডে’জ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব পর্যটনে ক্যারাভ্যান একটি সুপরিচিত নাম। বাংলাদেশে এই প্রচলন শুরু হলে দেশের পর্যটন শিল্পকে অন্যন্য উচ্চতায় নেওয়া সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, নয়ানাভিরাম সৌন্দর্যে ভরপুর কক্সবাজার। জেলার প্রতিটি উপজেলায় রয়েছে দর্শনীয় স্থান। যা ভালোভাবে উপভোগ করতে কমপক্ষে সপ্তাহখানেক সময় দরকার। কিন্তু জেলার সব জায়গায় থাকার সুব্যবস্থা না থাকায় পর্যটন শিল্পের আশানুরূপ বিকাশ ঘটছে না। ক্যারাভ্যান ট্যুরিজম চালু হলে দর্শনীয় জায়গাগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে।

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আমদানী করা ক্যারাভ্যানে রয়েছে বিছানা, এলইডি টিভি, হোম থিয়েটার, ওয়াই-ফাই, ডিভিডি প্লেয়ার, মাইক্রোওভেন, ফ্রিজ! ইচ্ছে হলেই উষ্ণ পানীয়ের ইচ্ছেপূরণ। আবার প্রাকৃতিক শোভা দেখতে দেখতে চা-কফি, স্ন্যাকস খেতে পারবেন যে কেউ।

পথের ধারে ভালো কোনও রেস্তোরাঁ বা ধাবায় বসে খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা স‍বারই রয়েছে। কিন্তু আমরা দিচ্ছি পছন্দসই খাবার কিনে অনায়াসে পাহাড়, নদী, হ্রদের ধারে মনোরম কোনও পরিবেশে বসে খাওয়ার সুযোগ। মাইক্রোওভেনে খাবার গরম করে পিকনিক মুডে পরিবারের সকলের সঙ্গে বসে ছুটির মজায় মেতে উঠতে পারবেন এখন সবাই।

কক্সবাজারের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার দূরত্ব অনেক হওয়ায় গাড়িতে ভ্রমণ অনেক সময় একঘেয়ে লাগে, বাচ্চাদের অবস্থা হয় আরও করুণ। ক্যারাভ্যানে থাকলে কার্টুন বা বিনোদনমূলক ডিভিডি চালিয়ে দিয়ে বাচ্চাদের আনন্দও বাড়িয়ে দেওয়া যাবে সহজেই।

ওয়াই-ফাই থাকায় গাড়িতে বসেই সেরে নেওয়া যাবে প্রয়োজনীয় কাজ। মূল্যবান জিনিস রাখার জন্য রয়েছে লকার সুবিধা। পরিবেশ-বান্ধব ইকো টয়লেট। দিন শেষে লম্বা ভ্রমণের পর হোটেলের নরম বিছানায় রাত কাটাতে চাইলে তারও আয়োজন রয়েছে।

আলাদা আলাদা গন্তব্যের জন্য ক্যারাভ্যান বুক করা যাবে। এই মুহূর্তে দু’ধরনের ক্যারাভ্যান রয়েছে। ডিলাক্স ও লাক্সারি ক্যারাভ্যান। ডিলাক্স ক্যারাভ্যানে চারজন এবং লাক্সারি ক্যারাভ্যানে আট জনের বসা ও শোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

দু’ধরনের ট্যুরিজমের কথা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি হলো নির্ধারিত। অর্থাৎ ক্যারাভ্যানটি একটি দর্শনীয় স্থানে রাখা হবে। আরেকটি হলো ভ্রাম্যমাণ, এ ক্ষেত্রে পর্যটক চাইলেই যেকোনো জায়গায় ক্যারাভ্যান নিয়ে যেতে পারবেন। ভ্রাম্যমাণ ব্যবস্থা চালু করতে কিছুটা সময়ের দরকার, তাই আপাতত ‘ফিক্সড ট্যুরিজম’ চালু করা হবে। ইতোমধ্যে পর্যটন করপোরেশনের সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, আপাতত ক্যারভ্যান ইয়ার্ড হিসেবে শৈবালের গলফ মাঠ ব্যবহ‍ার করা হবে। তবে পরবর্তীতে কোনো একটি পাচ তারকা হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সেখানে রাখা হবে। যেন সহজেই পর্যটকরা ক্যারাভ্যান হাতের কাছে পান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) পারভেজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, নেপচুন হলিডে’জ-এর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পর্যটন করপোরেশনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৫
এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।