ঢাকা: সন্ত্রাসবাদ দমন, সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমন ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অনুপ্রবেশ রোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সচিব পর্যায়ের প্রথম দিনের বৈঠক শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত বৈঠকের আগে সোমবার (১৬ নভেম্বর) এ প্রস্তুতি বৈঠক করেছে দু’পক্ষের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে সচিব পর্যায়ের চূড়ান্ত বৈঠকটি। প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে নির্বাচিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চূড়ান্ত বৈঠকটিতেই। সূত্র বলছে, বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনার পর মঙ্গলবারের বৈঠকে দু’পক্ষের মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত ও চুক্তি হবে।
সোমবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের আনুষ্ঠানিক বৈঠকটি হয়। দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে বিকেল সকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। অবশ্য, অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুমিন। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এম এ গণপতি। বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেয় ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল। আর ভারতের পক্ষে অংশ নেয় ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
দুপুরে এ বৈঠকে যোগ দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান এবং ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব মেহর্ষি।
বৈঠক চলাকালে বিকেল ৩টায় ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় বিএসএফ মহাপরিচালক ডিকে পাঠক ও ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ উপস্থিত ছিলেন। অবশ্য, বৈঠক শেষে কেউই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
এ বৈঠকের পর রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশ নেবেন ভারতের অতিথিরা।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় দু’দেশের সচিব পর্যায়ের চূড়ান্ত বৈঠকটি শুরু হবে। এরপর দু’দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব একান্তভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করবেন। আলোচনার পর বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চুক্তি সাক্ষর করা হবে দু‘দেশের মধ্যে।
চূড়ান্ত বৈঠকটিতে বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। আর ভারতের পক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে।
জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক সূত্র জানায়, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, অনুপ্রবেশ রোধ, সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমন, চোরাচালান বন্ধসহ ১৫টিরও বেশি বিষয় চূড়ান্ত বৈঠকের জন্য নির্ধারণ করা হয়।
বৈঠকের এক পর্যায়ে যুগ্ম-সচিব শফিকুর রহমান জানান, বিজিবি-বিএসএফ যেন সীমান্ত থেকে অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ না করে, সীমান্তে যেন উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়- এসব মিলিয়ে প্রায় ১৫টি বিষয় চূড়ান্ত বৈঠকের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যা, দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়, ভারতে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ও সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে আনা, মাদক চোরাচালান, সীমান্ত ঘেঁষে তৈরি করা ফেনসিডিল কারখানা বন্ধ, সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী তৎপরতা, ছিটমহল বিনিময় পরবর্তী কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি দমন, ভারতীয় জাল রুপি চোরাচালান বন্ধে ঢাকা-দিল্লির নেওয়া পদক্ষেপ, ভিসা সহজীকরণ এবং সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠকে কথা হবে।
চূড়ান্ত বৈঠকটির পর বিকেলে হোটেল সোনারগাঁওয়ে দু’দেশের পক্ষ থেকে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৫
এসএমএ/এইচএ
** বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক চলছে
** ঢাকায় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক