ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বছরের প্রথম ক্লাসের বিপরীতে ভোগান্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৬
বছরের প্রথম ক্লাসের বিপরীতে ভোগান্তি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার: শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা। খুব উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বছরের প্রথম ক্লাস করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল শিক্ষার্থীরা।

  কিন্তু বছরের প্রথম ক্লাসটি না করেই হিম-কুয়াশার মাঝে তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চিতে না বসিয়ে তাদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয় সড়কের ওপর।

না, কোন শাস্তিস্বরূপ নয়। ‘দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান ও প্রচারণা মাস’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসা কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থীকে এভাবেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, সকালের হিমশীতল কুয়াশার মাঝেই তাদের নিয়ে আসা হয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে।   একঘণ্টার পর সকাল সাড়ে ৯টায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এক কিলোমিটার দূরের বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে।   ধীরে ধীরে কুয়াশা চাদর ফেলে প্রকৃতিতে দেখা মেলে রোদের।   এ রোদের মাঝেই দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দাঁড় করিয়ে রাখা হয় শিক্ষার্থীদের। ফলে পুরো সময় জুড়ে ভোগান্তি ও দূর্ভোগের শিকার হয় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সকাল ৯টার মধ্যে তারা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য উপস্থিত হন। এরপর তারা ‘মাদকবিরোধী অভিযান ও প্রচারণা মাস’ উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন ও র‌্যালিতে অংশ নেয়। র‌্যালিটি কক্সবাজার বিয়াম মিলনায়তনের অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছার পর সকাল ১১টায় আলোচনা সভা শুরু হয়। কিন্তু বসার আসন সংকুলান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল তারা।

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ধনঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতে দোষ কিসের। এটা একটা বিষয় হলো।   সামান্য কিছু একটা পেলেই খবর ছাপতে হয়। ’

শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার নতুন বছরের বই পেয়েছি। শনিবার থেকে নতুন বছরের প্রথম ক্লাসে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানে এসে উল্টো হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মীর খান বাংলানিউজকে জানান, নতুন বই হাতে বছরের প্রথম ক্লাসে অংশগ্রহণের খুবই ইচ্ছে ছিল। কিন্তু স্যারদের নির্দেশে অনুষ্ঠানে এসে দীর্ঘসময় ধরে রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে আমাদের অনেকের বসার মতো জায়গার সংকুলানও হয়নি।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা টিএমসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবল দে হয়রানি ও ভোগান্তির কথা স্বীকার করে জানান, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে তিনি ২৬ জন ছাত্রীসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
 
কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রামমোহন সেন বাংলানিউজকে জানান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি চিঠি দিয়ে র‌্যালিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলা হয়। তবে এতো ভোগান্তি হবে জানলে কিছুতেই শিক্ষার্থী পাঠানো হতো না।

বাংলাদেশ সময় : ১৭৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৫
টিটি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।