ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাথর উত্তোলনে হুমকির মুখে তিস্তা ব্যারাজ

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
পাথর উত্তোলনে হুমকির মুখে তিস্তা ব্যারাজ বোমা মেশিনে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে

বোমা মেশিনে পাথর উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ। ব্যারাজের বাম তীর রক্ষা বাঁধের নিচে অর্ধশত বোমা মেশিনে উত্তোলন করা হচ্ছে পাথর ও বালু।

লালমনিরহাট: বোমা মেশিনে পাথর উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ।  

ব্যারাজের বাম তীর রক্ষা বাঁধের নিচে অর্ধশত বোমা মেশিনে উত্তোলন করা হচ্ছে পাথর ও বালু।

এর ঠিক দেড়/দুইশ’ গজ দূরেই রয়েছে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প। প্রশাসনের নজরদারীর অভাবেই প্রতিনিয়ত বাড়ছে বোমা মেশিনের সংখ্যা। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে এ সেচ প্রকল্পটি।

স্থানীয়রা জানান, নীলফামারী জেলার ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যে নব্বই দশকে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের সাধুর বাজার এলাকায় এ সেচ প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করে। এ ব্যারাজের বাম ও ডান তীর রক্ষার জন্য সিসি ব্লক দিয়ে রক্ষা বাঁধও নির্মাণ করা হয়। যার মধ্যে বাম তীর রক্ষা বাঁধটি সম্পূর্ণরূপে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ও সানিয়াজান ইউনিয়নের মধ্যে পড়ে। যা ওই সময় দেড় কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করেই কাজের সমাপ্ত করা হয়।

বোমা মেশিনে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছেব্যারাজের আনসার ক্যাম্পের পেছনে সেই বাঁধটির নিচেই তিস্তা নদীতে বসানো হয়েছে অর্ধশত বোমা মেশিন। এসব বোমা মেশিনে প্রতিদিন উঠছে পাথর ও বালু। ফলে বাঁধটিসহ তিস্তা ব্যারাজ হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোনো মুহুর্তে ধ্বসে যেতে পারে বাঁধসহ তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পটি। আর এ বাঁধটি ধ্বসে গেলে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ, লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক ও রেলরুটসহ বেশ কিছু স্থাপনা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।

বাঁধে বসবাসরত লোকজন জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গ্রুপ এ পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে পাথর উত্তোলনের কাজ। প্রশাসনের তৎপরতার অভাবেই প্রতিনিয়ত বাড়ছে বোমা মেশিনের সংখ্যা।
 
বোমা মেশিনে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছেতবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবি পাথর উত্তোলন বন্ধে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালালে বলা হয় এটা নীলফামারীর ডোমার উপজেলার আওতাভুক্ত। আবার নীলফামারী জেলা প্রশাসন গেলে তাদের বলা হয় হাতীবান্ধা উপজেলার মধ্যে পড়েছে। মূলত পাথর উত্তোলন এলাকাটি হাতীবান্ধা উপজেলার মধ্যে পড়েছে বলেই স্থানীয়দের দাবি।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবির জানান, পাথর উত্তোলন বন্ধে নীলফামারী জেলা ও হাতীবান্ধা উপজেলার নেতৃত্বে যৌথ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দিন খান বাংলানিউজকে জানান, নদী থেকে বালু বা পাথর উত্তোলনের কোন অনুমতি নেই। কেউ এসব কাজে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।