জীবন-জীবিকার টানে কর্মস্থলমুখী আর নানা প্রয়োজনে রাস্তায় নামা মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উন্নয়ন কাজে বিভিন্ন সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি আর টানাবর্ষণে খানা-খন্দক আর গর্তে এমনিতেই বেহাল ছিল মিরপুরের অধিকাংশ প্রধান আর অলি-গলির রাস্তা-ঘাট।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল থেকে শুরু ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী ও অতিভারী টানা বৃষ্টিতে শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকেই জলাবদ্ধ কয়েকটি সড়ক। শনিবার (২১ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে গেছে সেগুলোতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুরের প্রধান সড়ক বেগম রোকেয়া সরণির মিরপুর-১০ নম্বর থেকে শেওড়াপাড়া পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে শুক্রবার থেকেই। প্রায় দুই কিলোমিটারের রাস্তার কোথাও কোথাও কোমর সমান পানি। শনিবার ভোর থেকে নতুন করে পানি ঢুকেছে রাস্তার পাশে ও অলি-গলির বিভিন্ন দোকানের ভেতরেও। কোথাও কোথাও পানি সেঁচে বের করা হচ্ছে। পানি জমে ডুবে গেছে ফুটপাত পর্যন্ত। বেলা ১১টা পর্যন্ত অনেক দোকান-পাট খুলতেই পারেননি দোকানিরা।
সড়কটির মাঝে কাজীপাড়া থেকে সেনপাড়া পর্বতা এলাকার আল হেলাল হাসপাতাল এলাকা পর্যন্ত চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রাস্তাটুকুতে অনেকগুলো সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে স্টার্ট বন্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাইক্রোরবাস ও প্রাইভেটকারও বিকল হয়ে আছে পানিতে।
কাজ না পেয়ে দিনমজুর আর বের হতে না পেরে নিম্ন আয়ের মানুষজনই বেশি বিপাকে পড়েছেন। যেসব রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও লেগুনা চলাচল করছে, সেগুলোরও অনেকগুলোর চালকরা কোথাও কোথাও হাঁটু পানির মধ্যে আটকে পড়ছেন। ভাঙা-চোড়া এসব যানবাহনের অনেকগুলোর যাত্রীদের ভেতরে বসে ভিজতেও দেখা গেছে।
তবে বাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহন রাস্তায় নেমেছে অনেক কম। যানবাহন স্বল্পতায় যাত্রীরাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়। হাঁটুজল পেরিয়ে হেঁটে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হতেও বাধ্য হচ্ছেন অনেক কর্মজীবী।
পানি জমে থাকায় যানবাহন চলতে পারছে না কোনো কোনো সড়কে, পথচারীদেরও চলাচল প্রায় বন্ধ। কেউ কেউ সড়ক বিভাজক ধরে হাঁটছেন। আবার জলাবদ্ধতায় যানজটও দেখা দিচ্ছে কোথাও কোথাও।
রাস্তার পাশের কোনো কোনো দোকানের মধ্যেও পানি ওঠায় বেচা-কেনা বন্ধ রয়েছে বলে জানান দোকানিরা।
শনিবার দিনভর একই ধারায় চলে রোববারের (২২ অক্টোবর) আগে বৃষ্টিপাত কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ফলে দুর্ভোগ-দুর্গতি আরও বাড়ার আশঙ্কা মাথায় নিয়েই জীবিকার প্রয়োজনে রাস্তায় নেমেছেন বলে জানিয়েছেন মিরপুরের অনেক বাসিন্দা।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৭
এমআইএইচ/এএসআর