ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ফ্রান্সে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় পাচার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
ফ্রান্সে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় পাচার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মালয়েশিয়া থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে ২০১৫ সালে দেশে ফেরেন এএম এরশাদ মিয়া। এরপর থেকে তিনি ইউরোপের কোনো দেশে কাজ খুঁজতে থাকলে তাকে সম্পূর্ণ বৈধভাবে ফ্রান্সে পাঠানোর কথা বলেন দালাল মোশারফ হোসেন।

গত ২৩ এপ্রিল এরশাদ মিয়া, এরশাদ খন্দকার ও রিয়াজুল হাসান রিফাতকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পাঠায় দালাল চক্রটি। তাদের সেখান থেকে ফ্রান্সের টিকিট দেওয়ার কথা বললেও দুইদিন পর দেওয়া হয় লিবিয়ার টিকিট।

এরপর লিবিয়ার ত্রিপলী বিমানবন্দরে পৌঁছলে একদল অস্ত্রধারী গ্রুপ তাদের জিম্মি করে। বিমানবন্দর থেকে বের হলে আরেক দল অস্ত্রধারী তাদের জিম্মি করার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের গুলিবিনিময়ের ফলে এরশাদ মিয়া ও এরশাদ খন্দকার নামে দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় আহত হয় আরো একজন।

পরে দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় গত ২ আগস্ট দেশে ফেরেন তারা।

ভুক্তভোগী তিনজনের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যার-৩ সোমবার (৩০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া থেকে দালাল মোশারফ হোসেন (৫৫) এবং ঢাকার চকবাজার থেকে রেজওয়ান ওভারসীসের মালিক দেলোয়ার হোসাইন জসিমকে (৫০) আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭০টি পাসপোর্ট এবং নগদ এক লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।

এমরানুল হাসান বলেন, দালাল মোশারফ ৮লাখ টাকার বিনিময়ে বৈধভাবে ফ্রান্স পাঠানোর আশ্বাস দেয়। এজন্য তাদের বিএমইটি (জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো) কার্ড দিয়ে গত ২৩ এপ্রিল ইস্তাম্বুলের টিকিট দিয়ে পাঠানো হয়। তাদের বলা হয়, সেখানে পৌঁছানোর পর ই-মেইলে ফ্রান্সের টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু বিমানবন্দরে দুইদিন অপেক্ষার পর তাদের লিবিয়ার টিকিট দেওয়া হয়।

লিবিয়ার বিমানবন্দরে নামার পর একটি অস্ত্রধারী গ্রুপ তাদের জিম্মি করে। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর আরেকটি গ্রুপ জিম্মিকারীদের নিজেদের লোক দাবি করলে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে দুই জিম্মি গুলিবিদ্ধ হলে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

দীর্ঘ চারমাস চিকিৎসার পর তারা দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে ফেরন। তারপর তারা তিনজন র‌্যাব-৩ এর কাছে অভিযোগ করলে দালাল মোশারফসহ দুইজনকে আটক করে র‌্যাব।

আটকদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তিনি জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার বিদেশ প্রত্যাশীদের টার্গেট করে বহু সংখ্যক মানুষ লিবিয়ায় পাচার করে আসছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
পিএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।