ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দান শুরু 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৭
রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দান শুরু 

রাঙামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান রাঙামাটির রাজবন বিহার।

বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) দুপুর থেকে বেইন কর্মীদের পঞ্চশীল গ্রহণ ও বেইন ঘর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুই দিনব্যাপী ৪৪তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান।  

রাঙামাটি রাজবন বিহারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা মহাপুণ্যবতী বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে রাজবন বিহারে এবার ৪৪তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

রাঙামাটি রাজবন বিহারে সর্ববৃহৎ পরিসরে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই চীবর দান অনুষ্ঠান। কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান মূলত: বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও এখন পরিনত হয়েছে সার্বজনীন উৎসবে। ধর্মীয় সব আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি রাজবন বিহারে চীবর দান অনুষ্ঠান ঘিরে সব ধর্মালম্বী লোকজনের সমাগম ঘটে।  

চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশিষ রায় বেইন ঘর ও সুতা কাটার কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এরপর শুরু হবে ২৪ ঘণ্টার চীবর প্রস্তুতের আনুষ্ঠানিকতা। প্রায় দু’শো বেইনে ৬ শতাধিক দায়ক-দায়িকা অংশ নেয় চীবর প্রস্তুতির কাজে। সুতা সিদ্ধ ও রং করা, সুতা টিয়ানো, সুতা শুকানো, সুতা তুম ও নলীতে ভরা, বেইন টানা বেং বেইন বুননের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার সারারাত অতিক্রম করে দায়ক-দায়িকারা।  

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলবে চীবর প্রস্তুত। আর এভাবেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রস্তুত করা হয় এ পূর্ণময় চীবর, যা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বৌদ্ধ ধর্মীয় শাস্ত্র মতে, গৌতম বুদ্ধের অনুসারী মহা উপাসিক বিশাখা কতৃর্ক প্রবর্তিত রীতি অনুসারে এ চীবর প্রস্তত কষ্টদায়ক এবং কঠিন হলেও এ চীবর প্রস্তুত করে তা ভিক্ষু সংঘের হাতে তুলে দেওয়া সব দানের মধ্যে উত্তম দান অধিক পূণ্যময়।

বাংলাদেশে মহাউপাসিকা বিশাখা কতৃর্ক প্রবর্তিত রীতি অনুসরণে চীবর দান অনুষ্ঠান খুব একটা না হলেও ১৯৭৭ সাল থেকে রাঙামাটি রাজবন বিহারে শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভন্তে বিশাখা প্রবর্তিত রীতি অনুসারে এই চীবর দান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং এরপর থেকেই প্রতি বছর রাজবন বিহারে বৃহৎ পরিসরে এটি আয়োজন করা হচ্ছে।

রাজবন বিহারে অনুষ্ঠিত এ কঠিন চীবর দান শুধু বাংলাদেশে নয় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সর্ববৃহৎ।  

রাঙামাটি রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বাংলানিউজকে জানান, রাঙামাটি রাজ বনবিহার উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, রাঙামাটি রাজবন বিহারের ৪৪তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশের লক্ষে চার স্তরের পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাঙামাটির পুলিশ বিভাগ। পুরো অনুষ্ঠানকে নিরাপত্তা বলয়ে নিয়ে আসতে সাড়ে ৫ শতাধিক পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
এসও/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।